শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:০২ পূর্বাহ্ন

গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ৯৮ পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে শ্রমিক দল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৮ প্রদর্শন করেছেন

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ৯৮ পরিবারে পাশে দাঁড়াচ্ছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। তারা (শহিদ) এই সংগঠনটির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি শহিদের সন্তানদের পড়াশোনার মানোন্নয়নে কাজ করছেন নেতারা। এ লক্ষ্যে সারা দেশে ১০টি টিম গঠন করেছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক দল। এরই মধ্যে শহিদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছেন দায়িত্বশীলরা। চলতি মাসে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শহিদের কবর জিয়ারতও করবেন তারা। এছাড়াও সরকারি ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্যোগ নিচ্ছে শ্রমিক দল ও সম্মিলতি শ্রমিক পরিষদ (এসএসপি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও এসএসপির প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, এখন পর্যন্ত ৯৮ জন শহিদ শ্রমিকের তালিকা হয়েছে। আরও অনেক অজ্ঞাত রয়েছেন, যেগুলো সংশোধিত তালিকায় সংযোজন হচ্ছে। শুরু থেকেই শহিদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো ও আর্থিক সহযোগিতা করে আসছে শ্রমিক দল ও এসএসপি। এখন নতুন করে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ ও শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে পুনরায় আবারও শহিদদের পরিবারের বাড়িতে বাড়িতে পাঠাচ্ছি। পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তারা। এছাড়া শহিদের পরিবারে জন্য সরকারে কাছেও ক্ষতিপূরণ চাচ্ছি। আমরা নিজেরাও সংগঠন থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে কাজ করছি। গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা জেল থেকে বেরিয়ে প্রথমবার আর্থিক সহায়তা নিয়ে পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছি। এখন আবারও কার্যক্রম চলছে।

২৪এর ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে শহিদ শ্রমিক দল ও এসএসপির নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের মঙ্গে সাক্ষাৎসহ আর্থিক সহযোগিতার জন্য সারা দেশে ১০টি টিম করেছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক দল। প্রতিটি টিমে ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নেতারা সারা দেশে সরেজমিন শহিদ পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সহযোগিতার অর্থ তুলে দিচ্ছেন। তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শহিদের কবর জিয়ারত, দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নিচ্ছেন। পাশাপাশি শহিদ পরিবারের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানার চেষ্টা করছেন। তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় মানোন্নয়ন ও মনোবল বাড়াতে কাজ করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

রাজধানীর ইব্রাহিমপুরের শহিদ মোহম্মদ ফজলু ও মিরপুর-১৩র শহিদ ফাইজুল ইসলাম রাজনের পরিবারের সঙ্গে সোমবার সাক্ষাৎ করে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বুধবার মিরপুর-১১ এর শহিদ আসিফ মিয়া ও পূর্ব সেনপাড়ার শহিদ কবিরের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। পল্লবীর শহিদ মো. দেলোয়ার হোসেন ও সেনপাড়া পর্বতার শহিদ মো. শিফাত হোসের পরিবারের সঙ্গে আজ সাক্ষাৎ করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। একই ভাবে চলতি মাসেই অন্যান্য শহিদ পরিবারের সঙ্গে আর্থিক সহযোগিতাসহ সাক্ষাৎ করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

ভোলা ও পটুয়াখালী জেলায় শহিদ নেতাকর্মীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ টিমের দায়িত্বে আছেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে শহিদ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াচ্ছি। আমরা সব সময়ই তাদের পাশে আছি। দ্বিতীয়বারের মতো এখন আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করে তাদের খোঁজখবর নেওয়া হবে। সংগঠনের সাধ্যমতো শহিদ পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করা হবে। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় না এলেও শ্রমিক দল শহিদ পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।

কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের দাবি, এখন পর্যন্ত জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের ৯৮ জন শহিদ হয়েছেন। আহতের সংখ্যা আরও সহস্রাধিক। অনেকেই এখনো হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। কেউ কেউ হাত, পা কিংবা চক্ষু হারিয়ে পঙ্গু হয়েছেন। গত বছরের ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশের গুলিতে হতাহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগ। এর মধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকায় সবচেয়ে বেশি শহিদ হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি শ্রমিক শহিদ হয়েছেন ১৯ জুলাই ও ৫ আগস্ট।

শ্রমিক নেতারা জানান, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক দলের ভূমিকাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্র-জনতার পাশাপাশি শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরাও ছিলেন আন্দোলনের সম্মুখসারিতে। এতে অসংখ্য নেতাকর্মী হতাহত হয়েছেন। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এসব শহিদদের অবদান জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ