বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৭ অপরাহ্ন

ট্রাম্পের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তি করলে জেলেনস্কির কী লাভ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১২ প্রদর্শন করেছেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকার বিষয়ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। খবর বিবিসি বাংলার।

জেলেনস্কি যদিও এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকে প্রাথমিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, তিনি চান যে এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বলয়ে অন্তর্ভুক্ত হোক- যাতে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর নতুন করে কোনো আগ্রাসন চালালে তা প্রতিহত করা যায়।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘খুব বেশি’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেবে না, বরং ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেওয়ার এ দায়িত্ব ইউরোপের নেওয়া উচিত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার সম্ভাবনাকেও একপ্রকার নাকচ করে দিয়েছেন, যদিও এটি পাওয়া জেলেনস্কির দীর্ঘদিনের একটি লক্ষ্য।

গত বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ক্যাবিনেটে বলেন, বিরল খনিজ পদার্থ উত্তোলন করতে ইউক্রেনের মাটিতে আমেরিকার কর্মীদের উপস্থিতিই ইউক্রেনকে ‘স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা’ দিবে।

ট্রাম্প বলেন, কিয়েভকে ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার চিন্তা ‘ভুলে যেতে’ হবে। এ সময় তিনি রাশিয়ার দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, এ বিষয়টিই যুদ্ধ শুরুর অন্যতম কারণ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, মানুষ মারা বন্ধ করতে আমরা রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে একটি চুক্তি করবো।

কিন্তু জেলেনস্কি বলেছেন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া আমরা যুদ্ধবিরতিতে যাবো না, কিছুই কাজ করবে না, কিছুই সফল হবে না। আমি ন্যাটো বা তার অনুরূপ কোনো পথের সন্ধান পেতে চাই।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের বিরোধিতা করে আসছে। কারণ রাশিয়া মনে করে, এটি হলে ন্যাটোর সামরিক বাহিনী রাশিয়ার সীমান্তের খুব কাছাকাছি চলে আসবে।

বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক জোট ন্যাটো ২০০৮ সালে বলেছিল, ইউক্রেন এতে যোগ দিতে পারে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের পরামর্শ দিয়েছেন, কিন্তু রাশিয়া এর বিরোধিতা করেছে। এদিকে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায় ইউরোপের কাউকে রাখা হয়নি।

বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের মজুত ইউক্রেনে: বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের ৫ শতাংশই ইউক্রেনের হাতে আছে বলে মনে করা হয়। ১৯ মিলিয়ন টন গ্রাফাইটের প্রমাণিত মজুত আছে। এটি ইলেকট্রিক যানবাহনের ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ইউরোপে যত লিথিয়াম মজুত আছে তার এক-তৃতীয়াংশই ইউক্রেনে। এটি এখন যে ব্যাটারি তৈরি হয় তার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

তিন বছর আগে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের আগে বিশ্বে যত টাইটানিয়াম উৎপাদন হতো তার ৭ শতাংশ আসতো ইউক্রেন থেকে। এটি উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত সবকিছুতেই ব্যবহৃত হয়।

ইউক্রেনের ভূমিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিরল খনিজের মজুত আছে। সতেরোটি উপাদানের এসব খনিজ অস্ত্র উৎপাদন, বায়ু টারবাইন, ইলেকট্রনিকসসহ আধুনিক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অনেক পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে কিছু খনি রাশিয়া দখল করেছে। ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিদেঙ্কো হিসেবে অন্তত সাড়ে তিনশ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রাশিয়ান অধিকৃত এলাকায় আছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ