সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন

টানা ৪০ বছর পর তুরস্কের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা পিকেকের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ রবিবার, ২ মার্চ, ২০২৫
  • ১৭ প্রদর্শন করেছেন

টানা ৪০ বছর যুদ্ধের পর শান্তির পথে হাঁটল তুরস্কের কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)।

শনিবার এক বিবৃতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র বিরতিতে সম্মত হয়েছে সংগঠনটি। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তুরস্কে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির অবসান হলো। এএফপি।

পিকেকে জানিয়েছে, কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের আহ্বানের ভিত্তিতে একটি কংগ্রেস ডাকার জন্য প্রস্তুত, তবে এর জন্য ‘উপযুক্ত ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে হবে’ এবং কংগ্রেস সফল করার জন্য ওজালানকে ‘ব্যক্তিগতভাবে এটি পরিচালনা ও নেতৃত্ব দিতে হবে।’

গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, ওজালানের কারাগারের পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে এবং তিনি যেন ‘শারীরিকভাবে স্বাধীনভাবে বসবাস ও কাজ করতে পারেন এবং তার বন্ধুদেরসহ যে কারও সঙ্গে বাধাহীন যোগাযোগ রাখতে পারেন’ সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের বির্নুদ্ধে যুদ্ধরত নিষিদ্ধঘোষিত কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিকেকে তাদের ঐতিহাসিক নেতা ওজালানের আহ্বানের পর অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করেছে। ওজালান এ সপ্তাহে গোষ্ঠীটির বিলুপ্তি চেয়ে তাদের অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওজালানের আহ্বানের পর এই প্রথম গোষ্ঠীটি ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করল।

পিকেকের নির্বাহী কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নেতা আপোর (ওজালান) শান্তি ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান বাস্তবায়নের পথ সুগম করতে আমরা আজ থেকে কার্যকর অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করছি।’

কমিটি আরও জানায়, ‘আমরা এই আহ্বানের বিষয়বস্তু পুরোপুরি গ্রহণ করছি এবং এটিকে অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করব। আমাদের কোনো বাহিনী আক্রমণের শিকার না হলে তারা সশস্ত্র কোনো পদক্ষেপ নেবে না।’

তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত পিকেকে ১৯৮৪ সাল থেকে সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে, যার লক্ষ্য ছিল কুর্দিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠা করা। তুরস্কের ৮ কোটি ৫০ লাখ জনগণের প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দি।

এর আগে ১৯৯৯ সালে ওজালান কারাবন্দি হওয়ার পর বহুবার সংঘাতের অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওজালানের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টি একটি বার্তা প্রচার করে।

এই বার্তায় বলা হয়, ওজালান পিকেকের অস্ত্র সমর্পণের পাশাপাশি একটি কংগ্রেস আহ্বানের মাধ্যমে সংগঠনের বিলুপ্তি ঘোষণার কথা বলেছেন।

বিশ্লেষকরা বলেন, পিকেকের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি প্রতিষ্ঠা তুরস্ক ও সিরিয়ার জন্য উপকারী হবে।

শুক্রবার এরদোগান বলেন, ওজালানের আহ্বান একটি ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’। তিনি আরও বলেন, তুরস্ক বিদ্রোহের অবসান ঘটানোর বিষয়ে আলোচনাটির সফল সমাপ্তিতে পৌঁছাতে ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখবে।

ইরাক ওজালানের আহ্বানকে স্বাগত জানায় এবং বলে, এটি অঞ্চলটিতে স্থিতিশীলতা অর্জনের দিকে একটি ইতিবাচক এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ইরাকে পিকেকের উপস্থিতি বাগদাদ এবং আংকারার মধ্যে নিয়মিতভাবে একটি উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গোষ্ঠীটি ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলে অবস্থান করছে, যেখানে তুরস্কও সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে এবং প্রায়ই কুর্দি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে স্থল ও বিমান অভিযান পরিচালনা করে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ