আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম-৮ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তোড়জোড় শুরু করেছেন। নগরী ও উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে ইফতার মাহফিলসহ নানা উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান। অপরদিকে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আবু নাছেরকে জামায়াতের একক প্রার্থী ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৮ আসনটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩নং পাঁচলাইশ, ৪নং চান্দগাঁও, ৫নং মোহরা, ৬নং পূর্ব ষোলশহর ও ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড, বোয়ালখালী পৌরসভা এবং বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল, পশ্চিম গোমদণ্ডী, শাকপুরা, সারোয়াতলী, পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, আমুচিয়া ও আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ আসনটি বিএনপির নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে নবম সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসাবে জাসদ নেতা মঈনুদ্দীন খান বাদল নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসনে এমপি হন। তার মৃত্যুর পর দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমেদ উপনির্বাচনে এমপি হন। মোছলেমের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে এমপি হন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি হন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম। যদিও ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সব নির্বাচনই ছিল বিতর্কিত। একইভাবে দুটি উপনির্বাচনও বিতর্কিত ছিল। সূত্র জানায়, বিএনপি নেতা প্রয়াত সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৯১ সালে এ আসনে জয়ী হয়েছিলেন। সে সময় তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম বিএসসি। পরের নির্বাচনে বিএনপির টিকিটে প্রথমবার ভোট করে এমপি হয়েছিলেন ব্যবসায়ী এম মোর্শেদ খান। এরপর ২০০১ সালে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এ আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পান বিএনপির এরশাদ উল্লাহ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ তাদের মহাজোট শরিক জাসদের মঈনুদ্দীন খান বাদলকে এ আসনে প্রার্থী করে। বাদল নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসনে বিএনপির দীর্ঘদিনের কর্তৃত্বের অবসান ঘটান। মনোনয়ন প্রত্যাশী চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, ২০০৮ সালে চারদলীয় ঐক্যজোট থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। হয়তো বিজয়ী হতে পারিনি। কিন্তু সেই থেকে এখনো সাধারণ মানুষের সঙ্গে রয়েছি। মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব। অন্য কাউকে দিলেও তার জন্য কাজ করব।
আবু সুফিয়ান বলেন, দলের মনোনয়ন পেয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। দুঃসময়ে-দুর্দিনে দলের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে হামলা-মামলা সহ্য করতে হয়েছে। আশা করি আগামী নির্বাচনেও দল আমার ওপর আস্থা রাখবে। বোয়ালখালী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আবু নাছের বলেন, আমি দলমত নির্বিশেষে জনগণের সঙ্গে ছিলাম এবং আছি। বছরজুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা সময় কাজে লাগাচ্ছি। আমাদের ওপর সর্বস্তরের জনগণের আস্থাও রয়েছে।