শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪২ অপরাহ্ন

জাপানে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, ‘মেগা ডিজাস্টারের’ শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
  • ১৭ প্রদর্শন করেছেন

জাপানের কিউশু দ্বীপের কিরিশিমা পর্বতশ্রেণির শিনমোয়েদাকে আগ্নেয়গিরি বুধবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে অগ্নুৎপাত শুরু করেছে। অগ্নুৎপাতের ফলে আকাশে বিশাল ছাইয়ের স্তম্ভ উঠেছে। জাপান মেটেরিওলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) অগ্নুৎপাতের পর সতর্কতার মাত্রা ৩-এ উন্নীত করেছে। আশেপাশের ২ মাইল এলাকার মধ্যে পাথর পড়া ও আগ্নেয় মেঘ বা পাইরোক্লাস্টিক ফ্লোয়ের ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

মিয়াজাকি ও কাগোশিমা প্রিফেকচারের অনেক জায়গায় ঘন ছাই পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার ও আগ্নেয়গিরির কাছে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।

এ অগ্নুৎপাতের আগে টোকারা দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। এ ঘটনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

এদিকে, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক চর্চা হচ্ছে, কারণ ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত ‘দ্য ফিউচার আই স’ বইয়ে মাঙ্গা শিল্পী রিও তাতসুকি ২০২৫ সালের ৫ জুন ‘মেগা ডিজাস্টারের’ বা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যদিও তাতসুকি তার ‘স্বপ্নের’ ওপর অতিরিক্ত বিশ্বাস না করতে বলেছিলেন, তবুও তার পূর্বাভাস ভাইরাল হয়ে জাপানগামী ফ্লাইটের বুকিং কমে গেছে।

ঠিক ৫ জুন না হলেও একই সময়ে শিনমোয়েদাকে আগ্নেয়গিরি ফেটে পড়ল। আর তাতে তাতসুকির ভবিষ্যৎবাণী ফলে যাওয়া, ‘মেগা ডিজাস্টারের’ শঙ্কা এখন চেপে বসেছে জাপানে।

সরকার ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণে জেএমএ ২৭ জুন থেকেই অগ্ন্যুৎপাতের আলামত দেখে সতর্কতার মাত্রা ৩-এ উন্নীত করেছিল। অগ্ন্যুৎপাতের ঠিক আগের দিন সরকারের আগ্নেয়গিরি গবেষণা কমিটির বৈঠকে বিজ্ঞানীরা পর্বতের নিচে স্ফীতির চিহ্ন ও গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কমিটির চেয়ারম্যান শিমিজু হিরোশি বলেছেন, ‘এই অগ্ন্যুৎপাতে নতুন ম্যাগমা নেই, তবে ভবিষ্যতে ম্যাগমা অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’

শিনমোয়েদাকে আগ্নেয়গিরির ইতিহাস বেশ ভয়াবহ। ২০১১ সালে ভয়াবহ অগ্নুৎপাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও বিমান চলাচল বিঘ্নিত হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ছোট পরিসরে অগ্নুৎপাত হয়েছিল।

প্রায় ৯ লাখ মানুষ শিনমোয়েদাকে আগ্নেয়গিরির চারপাশে বসবাস করছে। প্রশাসন জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জেএমএ ২৪ ঘণ্টা আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ করছে এবং মানুষকে পরবর্তী আফটারশকের জন্য তৈরি থাকার নির্দেশনা দিয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে আরও বড় দুর্যোগের আশঙ্কা করছে সবাই।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ