বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন

দিনে ঘুমান ৩ ঘণ্টা, তা নিয়েই ইতিহাসের দুয়ারে ব্রাজিলের ৪৪ বছরের গোলকিপার

স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৬ প্রদর্শন করেছেন

বয়স ৪৪ পেরিয়ে গেছে। সামনে ৪৫-এর কেক কাটার পালা। এই সময়ের বহু আগেই ফুটবলে বুটজোড়া তুলে রাখার বয়স পেরিয়ে যায়। অনেকে কোচিংয়ে মনোযোগ দেন। কিন্তু ফ্লুমিনেন্সের ফাবিও যেন ভিন্ন ধাতুতে গড়া। গোলপোস্টের নিচে তিনি এখনও অটল এক পাহাড় হয়ে আছেন। ক্লাব বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর এবার তিনি ছুটছেন ফুটবল ইতিহাসের এক দুর্লভ রেকর্ডের পেছনে। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড এখন হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাকে।

ইন্টার মিলানের বিপক্ষে গোল না খেয়ে ফ্লুমিনেন্স জয় পেয়েছে। রক্ষণে তার সঙ্গী ছিলেন ৪০ বছর বয়সী থিয়াগো সিলভা। কিন্তু সবচেয়ে আলো কাড়েন ফাবিও। এই টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে ৩টি ক্লিন শিট রেখেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত তার ক্যারিয়ারে ক্লিন শিট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০৭, যা ইতালির কিংবদন্তি বুফনকেও ছাড়িয়ে গেছে।

তবে ফাবিওর মূল লক্ষ্য আরেকটি বড় রেকর্ড—সবচেয়ে বেশি অফিসিয়াল ম্যাচ খেলার রেকর্ড। বর্তমানে এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ইংল্যান্ডের পিটার শিলটন। তার খেলার সংখ্যা ১,৩৯০ (বা তার দাবি অনুযায়ী ১,৩৮৭)। ফাবিও এরই মধ্যে ১,৩৭৮টি ক্লাব ম্যাচ খেলেছেন। তার সামনে আর মাত্র কিছু ম্যাচ, তারপরই হয়তো ইতিহাসের পাতায় নতুন নাম উঠে যাবে।

গেল মে মাসে তিনি চুক্তি নবায়ন করেছেন। ফলে সমর্থকরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন সম্ভাব্য এক রেকর্ড উৎসবের। তবে আরেকজন তার দৌড়ে আছেন—ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। জাতীয় দল ও আল-নাসরে নিয়মিত খেলা চালিয়ে গেলে তিনি হয়তো ফাবিওকে পেছনে ফেলবেন। কিন্তু ফাবিওর এই যাত্রাটাই ইতিহাসে জায়গা করে নেবে, আপাতত সেটা বলে দেওয়াই যায়।

ফাবিওর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। খেলেছেন ব্রাজিলের বিভিন্ন যুব দলে। ২০০৪ সালের কোপা আমেরিকা জয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি, যদিও কোনো ম্যাচ খেলেননি।

তবে ক্লাব ফুটবলে তার সাফল্যের ভাণ্ডার বেশ সমৃদ্ধ। ভাস্কো দা গামার হয়ে ক্যারিওকা চ্যাম্পিয়নশিপ, আর ক্রুজেইরোর হয়ে কাটিয়েছেন দীর্ঘ ১৬ বছর। সেখানেই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পান। যদিও মাঝে মাঝে ভক্তদের সমালোচনার মুখেও পড়েছেন। সে সময় তিনি নিজের বিশ্বাসকে শক্তি হিসেবে নিয়েছিলেন। এখন বলেন, ‘আমি নিজেকে খুব বিশ্লেষণ করি। আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো। তাই বয়স আমাকে চিন্তিত করে না।’

ক্লাব ফুটবলে তার কীর্তির অভাব নেই। তার দীর্ঘ ফুটবল ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন বহু নামি-দামি ফুটবলারের বিপক্ষে। ঠেকিয়েছেন রোনালদো নাজারিও, রোনালদিনিওদের মতো কিংবদন্তিদের পেনাল্টিও।

মজার ব্যাপার হলো, ফাবিও দিনে মাত্র ৩ ঘণ্টা ঘুমান। একে বলে ‘শর্ট স্লিপ সিনড্রোম’। বিশ্বে মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ এই বিরল অবস্থা নিয়ে জীবন কাটান।

নিজের ঘুম নিয়ে ফাবিও জানান, ‘আজকে আমি ভোর ৪টায় ঘুমাতে গেছি। ৭টায় উঠে মেয়েকে স্কুলে ও ছেলেকে ড্রাইভিং ক্লাসে দিয়ে এসেছি, এরপর ট্রেনিংয়ে এসেছি। আমি ওয়েটলিফটিং না। ম্যাসাজ নিই না। সব ঠিকই চলে। ক্রুজেইরোতে একবার ঘুমের পরীক্ষা হয়েছিল, আমার ঘুম খুব গভীর ছিল। অল্প সময় ঘুমালেও রিকভারিতে সমস্যা হয় না।’

কম ঘুমিয়েই এতো কীর্তি! ঠিকঠাক ঘুমালে যে কী করতেন ফাবিও!

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ