আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। শুনানির সময় ডিসিদের বিচারিক ক্ষমতার প্রসঙ্গে আদালত তাকে বলেছেন, অবৈধ আইনের পক্ষে আপনারা অনেকে সাফাই গেয়েছেন। একজন সরকারি কর্মচারীকে বিচারের দায়িত্ব দিলে মানুষ কি ন্যায় বিচার পাবে? এ সময় মাথা নিচু করে চুপ ছিলেন সালমান এফ রহমান।
সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব তাকে এসব কথা বলেন।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সালমানকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এ সময় আদালতে অন্য একটি মামলার শুনানি চলছিল। ওই মামলার শুনানির সূত্র ধরে বিচারক তাকে দাঁড় করান। পরে তাকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন।
বিচারক সালমানের উদ্দেশে বলেন, একজন সরকারি কর্মচারীকে বিচারের দায়িত্ব দিলে কি মানুষ ন্যায় বিচার পাবে? অবৈধ আইনের পক্ষে আপনারা অনেকে সাফাই গেয়েছেন। জনগণের টাকায় যেসব অফিস বানানো হয়েছে, সেখানে তো সাধারণ মানুষের প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। বিচার ব্যবস্থাকে মানুষের কল্যাণকর জায়গায় নিয়ে যেতে কেউ কাজ করেনি।
দেশের চিকিৎসার বিষয়ে আদালত বলেন, দেশের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি) ও উচ্চবিত্তরা চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে যায়। কিন্তু সাধারণ মানুষ এদেশে চিকিৎসা নেন এবং অপচিকিৎসার শিকার হন। এ চিকিৎসা ব্যবস্থা কোনো সরকার দায়িত্ব নিয়ে উন্নত করেনি। আপনারা দীর্ঘদিন সরকারে থেকেও চিকিৎসা ব্যবস্থার কোনো উন্নতি করেননি।
পরে সাড়ে ১২টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানোর বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে তাকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। পরে দুপুর ১টার দিকে তাকে কাঠগড়া থেকে বের করা হয়। পরে প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ প্রশাসন থেকে আলাদা হবার পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদ সৃষ্টি করা হয়। যেখানে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার আগে ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা ছিল ডিসিদের। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে নির্বাহী বিভাগ (প্রশাসন) থেকে বিচার বিভাগ আলাদা করার পর সংক্ষিপ্ত বিচারসহ ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ১১টি ধারার ক্ষমতা ফিরে পেতে চান জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। ২০১৬ সালে ডিসি সম্মেলনকে সামনে রেখে তারা সিআরপিসির ১১টি ধারা সংশোধনসহ আইন ও বিচার সম্পর্কিত ২০টি বিষয়ে সমস্যা চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণের সুপারিশ করে। সে সময় সরকারের দ্বায়িত্বে থাকা অনেক মন্ত্রী, এমপিরা এই সুপারিশের পক্ষে সাফাইও দেন।