ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখে। দ্বিতীয়বারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যক্রমে ভারতের ওপর চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে রাশিয়ার তেল কেনাকে কেন্দ্র করে ভারতকে দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে ভারতীয় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, যা কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে জন বোল্টন, এককালীন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার।
বোল্টনের মতে, নোবেল মনোনয়ন ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে।
তিনি বলেন, “ভারতের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী বার্তা দেবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন কমাতে সাহায্য করবে।”
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যেমন সিএনএন, রয়টার্স এবং বিবিসি মনোযোগ দিয়ে দেখছে। তারা বলছে, ভারতের পদক্ষেপ কেবল ট্রাম্পকে তুষ্ট করার জন্য নয়, বরং কৌশলগতভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারতের উপর আরোপিত শুল্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারতের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করছে। অন্যদিকে, চীনের ওপর শুল্ক কার্যকর হয়নি, যা ভারতের তুলনায় চাপে আরও বেশি ফেলে দিয়েছে।
ভারতীয় মিডিয়ায়ও বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত। একাংশ মনে করছে, নোবেল পদক্ষেপ কূটনৈতিকভাবে ভারতের জন্য ইতিবাচক।
অন্যদিকে কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি রাজনৈতিক ও কৌশলগতভাবে একটি সূক্ষ্ম পদক্ষেপ, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর আকর্ষণ করবে। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী মোদি যে মার্কিন সফরে যাচ্ছেন, তা এই সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
জন বোল্টন বলেন, ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রতি আগ্রহ সুপরিচিত। ভারতের পদক্ষেপ হলে তা আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী বার্তা পাঠাবে এবং শুল্কনীতির কারণে উদ্ভূত টানাপোড়েন কমাতে সাহায্য করবে।
এছাড়া, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুও ট্রাম্পের নোবেল পদক্ষেপের পক্ষে সুপারিশ করেছেন। ফলে, ভারতের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অবস্থান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের পদক্ষেপ কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। শুল্কনীতির কারণে ভারতের অর্থনীতি ও বাণিজ্য কিছুটা চাপের মধ্যে থাকলেও, নোবেল পদক্ষেপের মাধ্যমে একটি সমঝোতা তৈরি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ কৌশলগতভাবে ট্রাম্পকে প্রফুল্ল করতে পারে এবং দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাস ও সহযোগিতা পুনঃস্থাপনে সহায়ক হতে পারে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ মিডিয়াও নানা মত প্রকাশ করছে। একাংশ মনে করছে, নোবেল পদক্ষেপের মাধ্যমে শুধু ট্রাম্পকে তুষ্ট করা হবে না, আন্তর্জাতিক কূটনীতিকভাবে ভারতের অবস্থানও দৃঢ় হবে।
অন্যদিকে কিছু বিশ্লেষক বলছেন, শুল্কনীতি এখনও বহাল থাকায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জটিলতা কিছুটা রয়ে গেছে। তবে নোবেল পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের কৌশলগত ভূমিকা আরও দৃঢ় হতে পারে।
সংক্ষেপে, ভারত ও মার্কিন সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতি নরেন্দ্র মোদির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। জন বোল্টনের পরামর্শ মোদি মানলে নোবেল মনোনয়ন কেবল ট্রাম্পকে তুষ্ট করবে না, আন্তর্জাতিক কূটনীতিকভাবে ভারতের অবস্থানও শক্তিশালী করবে।
এদিকে, শুল্কনীতির কারণে সৃষ্টি হওয়া দ্বিপাক্ষিক টানাপোড়েনও কিছুটা প্রশমিত হতে পারে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ কৌশলগতভাবে যথাযথ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।