বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

‘চোখে জল নিয়ে নাচা যায় না’, মোদির সফর নিয়ে ক্ষুব্ধ মণিপুরবাসী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪ প্রদর্শন করেছেন

আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দগদগে ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছে মণিপুরবাসী।  চোখের পানি শুকায়নি ভুক্তভোগীদের। এরইমধ্যে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মণিপুর সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর তার সম্মানে প্রশাসন আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী। কিন্তু ভুক্তভোগী মানুষরা বলছে, নাচ-গান নয়, দরকার সুবিচার আর সমস্যার স্থায়ী সমাধান।

প্রশাসনের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কুকি ও জো সম্প্রদায়ের সংগঠনগুলো। গাংতে ছাত্র সংগঠন জানিয়েছে, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাই, তবে ক্ষতের ভেতরে আনন্দ সম্ভব নয়। চোখে জল নিয়ে আমরা নাচতে পারব না।’

ইম্ফল হামের বাস্তুচ্যুতদের কমিটিও বলেছে, ‘আমাদের শোক শেষ হয়নি। এখনো আগুন জ্বলছে। আনন্দ অনুষ্ঠান আমাদের ব্যথার প্রতি অবজ্ঞা।‘

কুকি ইনপি মণিপুরের দাবি, শুধুমাত্র আগমন নয়, চাই সুবিচার। প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যিই মানুষকে শান্তি দিতে চান, তবে বাস্তব সমাধান দিতে হবে।

স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছে—কেন এত দেরি করে আসা? যখন রক্তপাত তুঙ্গে ছিল, যখন মানুষ আশ্রয় হারাচ্ছিল, তখন বিজেপি নেতৃত্বের ভূমিকা কোথায় ছিল? আজ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলেও ভুক্তভোগীদের দিনযাপন রয়ে গেছে দুঃসহ।

রাজ্যের নারী সংগঠন ইমাঘি মেইরা বলছে, মেইতেইরা যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ইম্ফলের সাধারণ মানুষ বলছে, প্রধানমন্ত্রী আসায় কিছু কথা বলার সুযোগ হবে, তবে দেরি হয়ে গেছে অনেক।

২০২৩ সালের মে মাসে মেইতেই-কুকি সংঘর্ষ শুরু হয়।  এতে এখন পর্যন্ত ২৬০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। কয়েক হাজার পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে শিবিরে দিন কাটাচ্ছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে কেন্দ্রীয় নীরবতা মানুষকে আরও ক্ষুব্ধ করেছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য প্রশাসনের পতন ও রাষ্ট্রপতি শাসনের পরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠছে, মোদির সফর কি সত্যিই শান্তির বার্তা, নাকি আসন্ন নির্বাচনের হিসাব-নিকাশ?

প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবিরও।  তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘মণিপুর এতদিন জ্বলেছে, আর প্রধানমন্ত্রী এলেন এখন! মানুষ ভোটে জবাব দেবে। ‘

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ