মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন

গাদ্দাফির অর্থে প্রচারাভিযান: ষড়যন্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত সারকোজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৯ প্রদর্শন করেছেন

লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছ থেকে নির্বাচনী তহবিল নেওয়ার অভিযোগে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিকে ষড়যন্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। দীর্ঘ তদন্ত ও আলোচিত মামলার রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, অবৈধ অর্থে ২০০৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন সারকোজি।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

২০১২ সালে ফরাসি অনুসন্ধানী গণমাধ্যম মেদিয়াপার্ট এক লিবিয়ান গোয়েন্দা নথি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছিল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির নির্বাচনী প্রচারে লিবিয়ার শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ৫ কোটি ইউরো অর্থায়নের চুক্তি করেছিলেন। সারকোজি ওই নথিকে জাল অভিহিত করে মানহানির মামলা করেছিলেন।

তদন্তে আরও উপস্থাপন করা হয়েছিল—সাবেক সাত লিবিয়ান শীর্ষ কর্মকর্তার বিবৃতি, সারকোজির ঘনিষ্ঠ ক্লদ গুয়াঁ ও ব্রিস হোর্তেফুয়ের লিবিয়া সফর, আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ এবং লিবিয়ার সাবেক তেলমন্ত্রী শুকরি গনেমের ডায়েরি। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ভিয়েনার দানিয়ুব নদীতে ডুবে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় গনেমকে।

অভিযোগকারীরা দাবি করেন, সারকোজি সচেতনভাবেই গাদ্দাফি সরকারের সঙ্গে এক ধরনের ‘দুর্নীতির আঁতাত’ থেকে সুবিধা নিয়েছিলেন।

২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় লিবিয়ার দীর্ঘদিনের একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফি বিরোধীদের হাতে ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হন। সে সময় ন্যাটোর সামরিক হস্তক্ষেপে বিমান নিষিদ্ধ অঞ্চল কার্যকর হয়, যেখানে সারকোজির নেতৃত্বে ফ্রান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ধারাবাহিক আইনি জটিলতা

ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে সারকোজি একের পর এক মামলায় জড়িয়েছেন। তার বিরুদ্ধে পৃথকভাবে দুর্নীতি, ঘুষ, প্রভাব খাটানো ও অবৈধ নির্বাচনী অর্থায়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি প্রথমে দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন এবং এক বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। এর মধ্যে তিন মাস ইলেকট্রনিক ট্যাগে কারাভোগ করেন, পরে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান।

 

অন্যদিকে, তথাকথিত ‌‘বিগম্যালিয়ন কেলেঙ্কারি’ মামলায় অবৈধ নির্বাচনী তহবিলের কারণে সারকোজিকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল—যার মধ্যে ছয় মাস কারাভোগ এবং ছয় মাস স্থগিত সাজা ছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি ফ্রান্সের শীর্ষ আপিল আদালতে গিয়েছেন।

গুরুতর প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে, দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তিনি ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মাননা লিজিয়ঁ দ’অনার খেতাব হারান।

তবুও ফরাসি দক্ষিণপন্থি রাজনীতিতে সারকোজি এখনো যথেষ্ট জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী। এমনকি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গেও তিনি নিয়মিত বৈঠক করেন বলে জানা যায়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ