শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫০ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমার জান্তা প্রধানের ঘন ঘন বিদেশ সফরের নেপথ্যে কী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২১ প্রদর্শন করেছেন

গত ছয় মাসে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ও জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং আগের কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি বিদেশ সফর করেছেন। ২০২১ সালে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর তিনি এমন ভ্রমণে খুব কমই গিয়েছিলেন। তবে এ বছর আসন্ন ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনে সমর্থন আদায়ের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি সফরের সংখ্যা বাড়িয়েছেন।

এই সময়ের ব্যবধানে তিনি দু’বার করে গেছেন মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চীন ও রাশিয়ায় এবং একবার করে থাইল্যান্ড, বেলারুশ ও সাম্প্রতিক সময়ে কাজাখস্তানে। এসব সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জান্তা প্রধানের এ ভ্রমণ তার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির প্রতিফলন—কারণ অভ্যন্তরীণভাবে বিদ্রোহ দমনে কিছুটা সাফল্য এসেছে এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক একঘরে অবস্থাও কিছুটা লাঘব হয়েছে।

জান্তা সরকারের মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে মিন অং হ্লাইংয়ের এসব সফরকে ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। মুখপাত্র জাও মিন তুন দাবি করেছেন, চীন, রাশিয়া ও কাজাখস্তান সবাই মিয়ানমারের নির্বাচনী আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছে।

২০২১ সালের অভ্যুত্থান ও বিক্ষোভ দমনে নৃশংস দমন-পীড়নের পর বহু দেশ মিয়ানমারের সেনাশাসকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানও নজিরবিহীনভাবে মিন অং হ্লাইং ও তার মন্ত্রীদের নিজেদের শীর্ষ সম্মেলন থেকে নিষিদ্ধ করেছে। গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির উদ্যোগ নেন। এর ফলে তার বিদেশ ভ্রমণের সংখ্যা কিছটা সীমিত হয়েছে।

মিয়ানমারের ভেতরে অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন এখনও চলছে। জুলাইয়ের শেষে জান্তা সরকার ঘোষণা দেয় যে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচন হবে। তবে চলমান সংঘর্ষের কারণে ভোট দেশের অর্ধেক অঞ্চলে সীমিত থাকতে পারে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় কেবল সেনাবাহিনীসমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিতে পারবে। পশ্চিমা দেশগুলো ইতোমধ্যেই বলছে, এই নির্বাচন আসলে মিন অং হ্লাইংয়ের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করারই একটি কৌশল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ