শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:০৪ অপরাহ্ন

কয়েকটি রাজনৈতিক দলের চাপে সরকার দিশাহারা: মঞ্জু

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪ প্রদর্শন করেছেন

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তারা কখনো একদলকে, আবার কখনো আরেক দলকে খুশি রাখার নীতি গ্রহণ করেছে। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের চাপে সরকার এখন দিশাহারা। তারা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে—এমন আস্থা রাখা কঠিন।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ঝিনাইদহ সফরকালে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা) ইয়ামিনুর রহমান ও যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদীউজ্জামান খোকন।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর প্রশাসনকে সঠিকভাবে পুনর্গঠন করা যায়নি। নানামুখী বিশৃঙ্খলার কারণে এখনো অনিশ্চিত—নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু হবে কি না। বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির দ্বন্দ্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কঠোর অবস্থান নিতে পারছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিলেন। সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান ও প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের রহস্য বছরের পর বছরেও উদঘাটন করা যায়নি। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে অর্থনীতি ধ্বংস করা হয়েছে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা গণঅভ্যুত্থানের পর কেউ প্রত্যাশা করেনি। রাষ্ট্রের কাছে আমাদের দাবি খুবই সামান্য—শুধু নাগরিক অধিকার ফিরে পাওয়া। মাদকাসক্ত তরুণদের নিয়ে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন, চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে মানুষ অতিষ্ঠ। ঝিনাইদহের যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরবস্থা চরমে, বিশেষ করে যশোর থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত সড়কের অবস্থা অত্যন্ত করুণ।

তিনি বলেন, কে ভারতের দালাল, কে পাকিস্তানের দালাল—এসব নিরর্থক বিতর্কে জাতিকে জড়ানো হয়েছে। কে মৌলবাদী, কে নাস্তিক—এসব প্রশ্নে অযথা বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও রাজনৈতিক দলগুলো অহেতুক বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো পরিকল্পনা দিতে পারছে না। মুখস্থ বক্তব্য নয়, বাস্তবভিত্তিক ও পরিকল্পিত সমাধান এখন সময়ের দাবি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এবি পার্টির ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়, যা জনগণের কাছে সমাদৃত হয়েছে। এখন সময় এসেছে অতীতের বিভেদ ভুলে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে সব ঝুঁকি মোকাবিলা করে জাতিকে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে হবে।

সভায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান ঝিনাইদহ জেলার তিনটি সংসদীয় আসনে দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ঝিনাইদহ-১ আসনে এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদীউজ্জামান খোকন, ঝিনাইদহ-২ আসনে অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান এবং ঝিনাইদহ-৩ আসনে মুফতি মুজাহিদুল ইসলাম এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী প্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় জুলাই অভ্যুত্থান বিষয়ক সহ-সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আহ্বায়ক আলমগীর হোসাইন, ঝিনাইদহ জেলা সদস্য সচিব নাজমুস সাদাত, মাগুরা জেলা আহ্বায়ক ইমরান নাজির ও মেহেরপুর জেলা সমন্বয়ক রফিকুজ্জামান প্রমুখ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ