ব্যাপক সমালোচনা ও যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারির পর ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের দুই ভূখণ্ডকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত বিলটির কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টির এমপি ওফির কাৎজ নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওফির বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত যাতে (পশ্চিম তীরের) জুদেয়া ও সামারিয়াকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করা সংক্রান্ত বিলটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।
১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলের জুদেয়া ও সামারিয়া দখল করেছিল ইসরাইল। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরের এই দুই ভূখণ্ড ইসরাইলের দখলেই আছে।
জুদেয়া ও সামারিয়াকে ইসরাইলি ভূখণ্ড হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে বুধবার বিল উত্থাপন করা হয় ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটে। উত্থাপনের পর ১২০ আসনের নেসেটে বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ২৫টি, বিপক্ষে ২৪টি। বাকি ৭১ জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। এই ৭১ জনের মধ্যে নেতানিয়াহু নিজে এবং লিকুদ পার্টির বেশ কয়েকজন এমপি আছেন।
এদিকে বিলটি পাস হওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেন, তারা (ইসরাইল) নেসেটে একটি বিল পাস করেছে, আমাদের পক্ষ থেকে এই বিলকে কোনো সমর্থন দেওয়া হবে না। কারণ আমরা এটিকে গাজায় শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছি।
আন্তর্জাতিক বিশ্বে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও বিলটির ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় এবং গতকাল এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, যদি এই বিলের বাস্তবায়ন আরম্ভ হয়— তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা হারাবে ইসরাইল।
ইসরাইলের পার্লামেন্টারি বিধি অনুসারে, কোনো বিল চূড়ান্তভাবে পাস হতে হলে উত্থাপনের পর সেটির ওপর চারবার ভোট হয়। চতুর্থবার ভোটের পর নির্ধারিত হয় যে বিলটি বাস্তবায়ন বা কার্যকর করা হবে কি না।
তবে নেতানিয়াহু নির্দেশ জারি করার পর আপাতত বিলটির ওপর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোট হচ্ছে না।
সূত্র: সিনহুয়া