ছক্কা মেরেও আউট তাসকিন, হারল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৬ রানে হেরে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে পিছিয়ে গেল টাইগাররা।
জয়ের জন্য শেষ তিন বলে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। ২০তম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে এক পা পেছনে চলে যান তাসকিন। তার পা স্টাম্পে লেগে বেল পরে লাল বাতি জলে যায়।
তবে তিনি ছক্কা হাঁকাতে ভুল করেননি। হিট আউট হয়ে যাওয়ায় সেই ছক্কা আর কাজে আসেনি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাসকিন আউট হওয়ায়; বাংলাদেশ ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ রানে অলআউট হয়।
১২০ বলে ১৬৬ রান তাড়া করতে নেমে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ৭৭ রানে স্বীকৃত ৬ ব্যাটসম্যন আউট হওয়ার পর ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় বাংলাদেশ। লেট অর্ডারে পেস বোলার তানজিম হাসান সাকিব ও নাসুম আহমেদ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। তারা ২৩ বলে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪০ রানের জুটি গড়েন।
২৭ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় দলীয় সর্বোচ্চ ৩৩ রান করে ফেরেন তানজিম হাসান সাকিব। দলীয় ১২৩ রানে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন নাসুম আহমেদ। তিনি ১৩ বলে ২০ রান করে আউট হলে জয়ের যে কিঞ্চিত আশা ছিল সেটাও শেষ হয়ে যায়।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান। দুই পেস বোলার তাসকিন আহমেদ এবং মোস্তাফিজুর রহমান দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেননি। শেষ ৩ বলে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। ২০তম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকালেও হিট আউট হয়ে যান। যে কারণে জয়ের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২০ বলে ১৬৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪১ রানে প্রথম সারির ৪ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় টাইগাররা।
ইনিংসের শুরুতে মাত্র ৫ বলে ১৫ রান করে রোমারিও শিপার্ডের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হন ওপেনার তানজিম হাসান তামিম। তার বিদায়ে ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
দলীয় ২৯ রানে ফেরেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। তিনি স্পিনার আকিল হোসেনের ঘূর্ণি বলে বিভ্রান্ত হয়ে ৮ বলে ৫ রানে ফেরেন।
দলীয় ৩৯৮ রানে আউট হন আরেক ওপেনার সাইফ হাসানও। তিনি ৭ বলে ৮ রান করে আকিল হোসেনের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন।
এরপর মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে ফেরেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি। তিনি জেসন হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে ৪ বলে ১ রানে ফেরেন। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ৫.৩ ওভারে ৪১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল।
এর আগে শাই হোপ এবং রোভম্যান পাওয়েলের ব্যাটিং তাণ্ডবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চ্যালেঞ্জিং স্কোর।
১৫ ওভার খেলা শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ১০১/৩ রান। তখন মনে হয়েছিল; সাধ্যের মধ্যেই থাকবে স্কোর। কিন্তু শেষ ৫ ওভার তথা ৩০ বলে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৬৪ রান করে ক্যারিবীয়রা।
শাই হোপ এবং রোভম্যান পাওয়েলের ব্যাটিং তাণ্ডবে ৩ উইকেটে ১৬৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ক্যারিবীয়রা। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় জয় পেতে হলে বাংলাদেশকে ১২০ বলে ১৬৬ রান করতে হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ।
কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৯ রান করা উইন্ডজ; এরপর মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায়। ক্যারিবীয় শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তিনি ৫৯ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙেন।
রিশাদের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওপেনার আলিক অ্যাথানেজ। তার বিদায়ে ৮.২ ওভারে ৫৯ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙে ক্যারিবীয়দের।
এরপর ১৩তম ওভারে দলীয় ৮২ রানে পরপর দুই বলে ব্রান্ডন কিং ও শেরেফান রাদারফোর্ডকে ফেরান তাসকিন আহমেদ।১৩তম ওভারে মাত্র ২ রান খরচ করে ২ উইকেট তুলে নেন তাসকিন।
এরপর অধিনায়ক শাই হোপের সঙ্গে জুটি গড়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালান রোভম্যান পাওয়েল। চতুর্থ উইকেটে তারা ৪৬ বলে ৮৩ রানের অনবদ্য জুটি গড়েন। তাদের এই জুটির কারণেই ১৬৫ রান তুলতে সক্ষম হয় ক্যারিবীয়রা।
ইনিংসের শেষ ৫ ওভারে ৬৪ রান করে উইন্ডিজ। শেষ ওভারে তানজিম হাসান সাকিবকে পরপর তিন বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ২২ রান আদায় করে নেন রোভম্যান পাওয়েল। তিনি মাত্র ২৮ বলে এক চার আর ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। সমান ২৮ বলে এক চার আর ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৪৬ রান করে অপরাজিত থাকেন শাই হোপ।
এই সিরিজের আগে মিরপুরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ।