রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন

সময় যেভাবে কাটছে শাবনূর মৌসুমী ও শাবনাজের

বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৪ প্রদর্শন করেছেন

ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর, মৌসুমী ও শাবনাজ নব্বই দশকে রুপালি পর্দায় ঝড় তুলেছিলেন। কিন্তু এখন তারা অনেকটাই পর্দার আড়ালে চলে গেছেন। কেউ আছেন অস্ট্রেলিয়ায়, কেউ আমেরিকায়, আবার কেউ আছেন দেশে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কে কোথায় কেমন আছেন—

শাবনূর 

শাবনূর অভিনয় নিয়ে যতটা প্রিয় হয়েছিলেন, নানা স্ক্যান্ডালও তাকে জেঁকে ধরেছিল। তবে এসবকে পাত্তাই দিতেন না তিনি। এ নিয়ে প্রেমের গুঞ্জনও কম হয়নি। তারকার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের ঘিরেও গুঞ্জনের ডালপালা ছড়িয়েছিল। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে শাবনূর বলেন, তিনি ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী অনীক মাহমুদের সঙ্গে আংটি বদল করেছেন। পরের বছর ২৮ ডিসেম্বর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত হয়ে পড়েন অভিনেত্রী।

বিয়ের পর ভাই ও বোনদের মতো শাবনূরও স্বামী অনীককে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর শাবনূর-অনীক দম্পতির ছেলে আইজান নিহানের জন্ম হয়। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি তাদের বিবাহবিচ্ছেদের খবর পাওয়া যায়।

এর আগে ১৪ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন শাবনূর। টানা দেড় যুগ এই মাধ্যমে কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে সমসাময়িক নায়িকাদের মধ্যে ঢালিউডের সেরা আসনটি নিজের করে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। আজও শাবনূর চর্চিত একটি নাম। এক যুগের বেশি সময় ধরে অনিয়মিত।

একসময়ের সুপারহিট নায়িকা অস্ট্রেলিয়ায় কীভাবে কাটছে জীবন?—সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, আমার তো ভাই-বোন-মাসহ সবাই এখন অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন। এক যুগের বেশি সময় এখানে থাকার কারণে অনেক বন্ধুবান্ধবও জুটেছে। তাদের সঙ্গে আড্ডা হয়। ঘুরতে যাই। আমি নিজে ড্রাইভ করতে পছন্দ করি। বন্ধুরা ব্যস্ত থাকলে আমি ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বের হই। তা ছাড়া আমার ছেলের স্কুল আছে, তার দেখভাল সবই আমাকে করতে হয়।

তিনি বলেন, ক্রিকেট ওর প্রিয় খেলা। সময় পেলে আমরা মা–ছেলেসহ অন্যরা মিলে মাঠে গিয়ে খেলা দেখি। আমার কাছে তো মনে হয়, সময় আরও কম হয়। সে হিসেবে বলতে পারি— পরিবার, সাংসারিক নানা কাজকর্ম এবং বন্ধুবান্ধব মিলে সময়টা দারুণ কাটে।

মৌসুমী 

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে মা ও মেয়ে ফাইজাকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন মৌসুমী। মায়ের অসুস্থতা এবং মেয়ের বেড়ে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাদের পাশে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। জীবনের এই নতুন অধ্যায়ে পরিবারকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’খ্যাত অভিনেত্রী। ‘দেশান্তর’ সিনেমাটি ছিল মৌসুমীর সবশেষ সিনেমা।

এর আগে ‘সোনার চর’ ও ‘ভাঙ্গন’ সিনেমাতেও দেখা গেছে তাকে। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবেও কাজ করেছিলেন তিনি। মৌসুমীর দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়েও আপাতত অনিশ্চয়তা।

‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমা দিয়েই মানুষের মনে জায়গা করে নেন মৌসুমী। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ছবিটি ব্লকবাস্টার ব্যবসা করে। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে দূরে সরে আছেন দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে। এ বিষয়ে স্বামী, অভিনেতা ওমর সানী বলেন, মৌসুমী এখন অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার চিন্তায় রয়েছেন।

ওমর সানী আরও বলেন, দুই-তিন বছর ধরে মৌসুমী বলছে— অভিনয়ে আর আগ্রহ পাচ্ছে না। ভালো গল্প পায় না, আর শুটিংয়ের সময় কাজের সঙ্গে কথার মিলও থাকে না। আমি বহুবার অনুরোধ করে তাকে অভিনয়ে ফিরিয়েছি। কিন্তু এবার সে বেশ দৃঢ় নিজের সিদ্ধান্তে।

শাবনাজ 

১৯৯১ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী’ সিনেমায় চাঁদনী চরিত্রে অভিনয় করে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিলে শাবনাজ। ১৮ বছর ধরে তিনি নেই চলচ্চিত্রে। স্বামী, সন্তান আর সংসার নিয়েই ব্যস্ত। থাকেন ঢাকার উত্তরায়। চলচ্চিত্রে অভিনয় ছেড়ে দিলেও নাটকে অভিনয় করেছিলেন শাবনাজ। দুটি মাধ্যম থেকেই এখন আড়ালে তিনি। আড়ালে থাকা শাবনাজের হঠাৎ দেখা মেলে চলচ্চিত্র কিংবা নাটকসংশ্লিষ্ট কিছু ঘরোয়া আয়োজনে।

এ বিষয়ে শাবনাজ বলেন, নিজেকে এখন একেবারে অন্য এক জীবনের বাসিন্দা করে রেখেছেন, যে জীবনে সংসার, স্বামী ও সন্তান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে চান না। চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে সহশিল্পী, সেই সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক নাঈমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।

তিনি বলেন, ‘বিষের বাঁশি’ সিনেমার কাজ করতে গিয়ে দুজনের প্রেমের শুরু। আর ‘লাভ’ সিনেমার কাজ করতে গিয়ে ভালোবাসা বাড়তে থাকে। তবে শুরুতে কেউ কাউকে নিজেদের ভালো লাগার বিষয়টি বুঝতে দিতে চাইতেন না। ছবিতে অভিনয়ের তিন বছরের মাথায় শাবনাজ ও নাঈম দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর তারা ভালোবেসে বিয়ে করেন। বিয়ের পর দুই বছর সিনেমায় অভিনয় করেন শাবনাজ। বিয়ের পর নাঈমের বাবা মারা যান। এতে ভীষণ ভেঙে পড়েন নাঈম। সেই সময়টায় শাবনাজকে স্বামীর পাশে থাকতে হতো সবচেয়ে বেশি।

শাবনাজ বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই ময়না, ময়না বলে ডাকাডাকি করে অস্থির করে ফেলত নাঈম। আমাকে ওর সামনে বসে থাকতে হতো। আমার সঙ্গটা তখন ওর বেশি দরকারও ছিল। আমরা অনেক গল্প করতাম, আড্ডা দিতাম। নাঈম কাজও কমিয়ে দেয়। আমিও হাতে থাকা কিছু ছবির কাজ করে নিজেকে গুটিয়ে নিই।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ