অনলাইন ডেস্ক : অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানিতে আয় বাড়লেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় সার্বিকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের তৈরি পোশাক খাত। এর ফলে বড় বড় অনেক কারখানা শ্রমিকদের মজুরি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এখনো প্রচলিত বাজার ও প্রচলিত পণ্যের ওপর নির্ভরশীল এ খাত। সরকারের নীতি সহায়তা ও মূল্য সংযোজন করা না গেলে সামনে কঠিন সংকট মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করেন উদ্যোক্তারা। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুলাই-জানুয়ারিতে অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাকের রপ্তানি প্রবিদ্ধি হয়েছে ১১.৬৯ শতাংশ। এতে আয় হয়েছে ৫৪৬ কোটি ডলার। এর আগের বছর একই সময়ে এ আয় ছিল ৪৮৯ কোটি ডলার।
তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) সংকলিত এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় রপ্তানি যথাক্রমে ৮.৭৪ শতাংশ, ২৩ শতাংশ এবং ১৭.৫৭ শতাংশ বেড়েছে। তবে ভারতে আয় কমেছে ২১.৮৬ শতাংশ। এ ছাড়া স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস এবং পোল্যান্ডে রপ্তানি যথাক্রমে ৬.০৫ শতাংশ, ৪.২৫ শতাংশ, ১১.৭৭ শতাংশ এবং ২০.৩০ শতাংশ রপ্তানি আয় বেড়েছে। ইতালিতে কমেছে ১.৮১ শতাংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য জার্মানিতে রপ্তানি আয় কমেছে ১৩.৪৬ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ৩৫১ কোটি ডলার। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির প্রথম সাত মাসে আয় হয়েছে ৪৭৯ কোটি ডলার, যা এর আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩.৯০ শতাংশ কম। যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় যথাক্রমে আয় হয়েছে ৩৩১ কোটি ২৯ লাখ ডলার এবং ৮৭ কোটি ১২ লাখ ডলার, যা বছরে ১২.৯৮ শতাংশ এবং ০.৬৮ শতাংশ বেড়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এ সময় বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর রপ্তানি আয় নেতিবাচক হলেও বাংলাদেশ অনেকটা ভালো করেছে। তিনি বলেন, ‘এ জন্য নতুন বাজারের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর ছিল। দেশগুলোর চাহিদা অনুসারে পণ্য জোগাড় করা এবং বাজার গবেষণায় গুরুত্ব দিয়েছে বিজিএমইএ।’ তিনি বলেন, অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপান, কোরিয়া ভালো করছে। তুরস্ক একসময়ের নেতিবাচক রপ্তানি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া ভালো করছে। বর্তমানে উদ্যোক্তাদের নজর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ও আরব আমিরাত। উদ্যোক্তা এবং আন্তর্জাতিক বাজার ও শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করে লাইলা স্টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএ পরিচালক ইমরানুর রহমান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশের পোশাক খাতের ভেতরের চিত্র অন্য রকম। মজুরি বাড়লে ক্রেতারা পোশাকের মূল্য বাড়াবে এমন প্রতিশ্রুতি ছিল। বাস্তবে তারা কথা রাখেনি। ফলে অনেক বড় কারখানা মজুরি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ইতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পোশাকের সঙ্গে অন্যান্য অনুষঙ্গের দাম বেড়েছে। ক্রেতা সিএম (কস্ট অব মেকিং) বাড়াচ্ছে না।