খুলনার ডুমুরিয়ায় ধর্ষণের শিকার সেই তরুণীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে র্যাব-৬ এর একটি দল ভুক্তভোগীর খালার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে দেয়। এর আগে বুধবার দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ ও রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ভুক্তভোগীর খালাতো ভাই গোলাম রসুল বাদী হয়ে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন। অন্য ৫ আসামি হলেন- গাজী আব্দুল হক, আলামীন গাজী,আক্তারুল আলম সুমন, সাদ্দম গাজী ও মো. ইমরান হোসেন। র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার সারওয়ার হুসাইন জানান, ভুক্তভোগী তরুণীর খালাতো ভাই বুধবার আদালতে মামলা করেন। এরপর ভুক্তভোগী নিরাপদে আছে কি না সে ব্যাপারে র্যাবের পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হয়। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় র্যাবের একটি দল যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চাঁচুড়ী এলাকায় ভুক্তভোগীর খালার বাড়িতে যায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যা ৬টার দিকে চাঁচুড়ী পুলিশ ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকান্ত কুমার সাহা বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আদালতে মামলার কোনো নির্দেশনাও এখনো হাতে পাইনি। এ পর্যন্ত কেউ এ ঘটনায় থানায় জিডি অথবা মামলা করতে আসেনি। মামলা সূত্রে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভনে গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ শাহপুর বাজারে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। এ দিন রাতেই ভুক্তভোগী খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ইন্ধনে ওসিসি কর্তৃপক্ষ যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে ছাড়পত্র প্রদান করে। ওসিসি থেকে বের হওয়া মাত্র ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন ভুক্তভোগী ও তার মাকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আশেপাশের লোকজন গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এদিন রাতে অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন আসামি ভুক্তভোগী ও তার মাকে হুমকি দিয়ে পুলিশের কাছে মিথ্যা বক্তব্য প্রদানে বাধ্য করে। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার চাচাতো ভাই ভুক্তভোগীকে আবারও অজ্ঞাত একটি স্থানে আটক রাখে। মামলায় আরও বলা হয়, ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে ট্রাইব্যুনালে এসে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে। ওই তরুণীকে বিয়ের প্রভোলনে এর আগেও একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।