সিলেক্টিভ (বাছাইকৃত) সংস্কার নয়, জাতীয় ঐক্যর মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, যেখানে ঐকমত্যে হবে সেখানে সংস্কার করতে হবে। সিলেক্টিভ কোনো ঐক্যমত্যে হবে না। জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐকমত্যে বিশ্বাসী হতে হবে। প্রত্যেকটি বিষয়ে ঐকমত্যে সৃষ্টি করতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৮০ দিন: গতিমুখ ও চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজন করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
আমীর খসরু বলেন, ১৬ বছরে বহু লোক জীবন দিয়েছেন, চাকরি হারিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারিভাবে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদীদের দোসররা ফিরে আসার জন্য ঘোরাঘুরি করছে।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছি। বাংলাদেশের নাগরিকদের মনোজগতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সবার মধ্যে আশা ও আকাঙক্ষা জেগেছে। একটা ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ করতে হবে। জাতীয় ঐক্যর মাধ্যমে সবাই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে।
আমির খসরু আরও বলেন, প্রায় ৬ বছর আগে ‘ভিশন ২০৩০’ তে বেগম খালেদা জিয়া সংস্কার কথা বলেছেন। বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছে। আলোচনা সভা, সেমিনার, লিফলেট বিতরণ করেছি। সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। আজকের পেক্ষাপটে কী মৌলিক সংস্কার করবো, কীভাবে করবো সেই প্রশ্ন আসে। যেসব সংস্কারে জাতীয় ঐক্য ভিত্তি হবে সেগুলো সংস্কার করতে পারে। যে সংস্কারে জনগণ ঐকমত্য হবে না, সব রাজনৈতিক দল একমত হবে না সেগুলো পরবর্তী সরকারের জন্য রেখে দিতে হবে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, গত ১৬ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি বলেই শেখ হাসিনার মতো দানবীয় শক্তির উত্থান হয়েছে। জনগণের মালিকানা প্রধান বাহক হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে তার পছন্দের জনপ্রনতিনিধি নির্বাচিত করবেন। জনগণের সবচেয়ে বড় ঐক্য জনগণ ভোট দিতে চায়। ৩৫ বছরের নিচে কেউ এখনো ভোট দিতে পারেননি।
আমির খসরু বলেন, সংস্কারের জন্য সরকার ১০ টা কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে নতুন নতুন দাবি উপস্থাপন করছে। তাদের দাবির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার বা কমিশনের দাবি এক কিনা, তা আমরা জানি না। এগুলো পরিষ্কার করতে হবে। কারণ এই দাবিগুলো সংস্কারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সদস্য আকবর খানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণসংসহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।