মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন

ঢাকায় কবরে মাহমুদুর নয় হারিছ চৌধুরী, ডিএনএ রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩৪ প্রদর্শন করেছেন

ঢাকার সাভারের একটি মাদ্রাসায় প্রফেসর মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে একজনকে দাফন করা হয়েছিল। প্রায় আড়াই বছর জানা গেল লাশটি মাহমুদুরের নয়, বিএনপির বহুল আলোচিত প্রভাবশালী এক নেতার।

লাশটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পলাতক অবস্থায় তিনি ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তখনকার প্রেক্ষাপটের কারণে পলাতক হারিছের লাশ দাফনেও পরিচয় গোপনে বাধ্য হন ঘনিষ্ঠরা।

সাভার থানার ওসি মো. জুয়েল মিয়া ও হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গত ৬ নভেম্বর আদালতে সেই ডিএনএ রিপোর্ট জমা দেয়া হয়। সিআইডির এ রিপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার কামারুন মুনিরা গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি আদালতের, তাই আদালতই বিষয়টির ব্যাপারে তথ্য দেবেন।

স্বজনরা জানান, হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা ছিল। পাশাপাশি দুদকের দুর্নীতি মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা ও জরিমানা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়, রেড নোটিশ ইস্যু হয় ইন্টারপোলে। এমন প্রেক্ষাপটে হারিছ চৌধুরী নাম ও চেহারা পাল্টে আত্মগোপনে চলে যান। ঢাকায় গোপন জীবনযাপন শুরু করেন মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে।

সিলেটের জকিগঞ্জের হারিছ চৌধুরী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। নিজ দল বিএনপি ও সরকারে ছিল তার প্রচণ্ড প্রভাব। ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে তিনি আড়ালে চলে যান। এরপর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হারিছ চৌধুরী নাম পাল্টে হয়ে যান প্রফেসর মাহমুদুর রহমান। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। প্রফেসর মাহমুদুর পরিচয়েই তার লাশ দাফন করা হয় সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর জালালাবাদ এলাকার জামিয়া খাতামুননাবিয়ান মাদ্রাসা কবরস্থানে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গত ৫ সেপ্টেম্বর বাবার পরিচয় শনাক্তে মেয়ে সামিরা তানজিম চৌধুরী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আদালত লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি দেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৬ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর লাশ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।

হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী জানান, তিনি এখনো আইনিভাবে কোনো তথ্যউপাত্ত পাননি। তার আইনজীবী উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে ব্রিফ করবেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ