মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন

ভুলের জন্য ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৯ প্রদর্শন করেছেন

ভুলের জন্য অনুশোচনা করতে এবং সঠিক বিচারে অপরাধ প্রমাণ হলে ক্ষমা চাইতেও আওয়ামী লীগের আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম বিশেষ এক অডিও সাক্ষাৎকারে সময় সংবাদকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট অবসান হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ শাসনের। দলের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সারা দেশে গা ঢাকা দিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

হত্যা ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা করেছেন সাধারণ মানুষ। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে শীর্ষ নেতারা। আত্মগোপনে রয়েছেন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে তলানিতে ঠেকেছে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম। নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছাত্রলীগ। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধেরও দাবি উঠেছে।

সম্প্রতি শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া কিছু ফোনালাপে জুলাই আন্দোলন ঘিরে অনুশোচনা দেখা যায়নি। আন্দোলনে ষড়যন্ত্রের নকশাই বারবার বলতে চেয়েছেন তিনি। তবে প্রথমবার অডিও সাক্ষাৎকারে ভুলের জন্য অনুশোচনা করতে এবং সঠিক বিচারে অপরাধ প্রমাণ হলে ক্ষমা চাইতেও আওয়ামী লীগের আপত্তি নেই বলে সময় সংবাদকে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি আরও বলেন, ‘আত্মগোপনে থেকে অনুশোচনা কি কারাগারের ভেতরে বসে করবে আওয়ামী লীগ? কীভাবে করবে? ভুলগুলো প্রকাশ করেই আমরা জাতির কাছে শুধরানোর পথ দেখাবো। আমাদের পরিকল্পনা এখন তেমন।’
‘প্রকৃতপক্ষেই আমরা যদি ভুল করে থাকি বা অন্যায় করে থাকি, সেই অন্যায়ের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই অথবা ক্ষমা চাইবো না এ ধরনের গোঁড়ামি আমাদের কাজ করে না। এই মানসিকতার দল আওয়ামী লীগ নয়’, বলেন নাছিম।

জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দিতে চান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে যে নাভিশ্বাস উঠেছে এর থেকে রক্ষার জন্য আমরা অচিরেই কর্মসূচি দিবো। গণতন্ত্রের স্বার্থেই মানুষের এবং তরুণ প্রজন্ম ও আগামী প্রজন্মের যে চাহিদা বা প্রত্যাশা পূরণের জন্য সময়ের চাহিদা, বাস্তবতার চাহিদা মিলিয়েই দলকে পরিচালনা করবো।’
এদিকে রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব গ্রহণ করবে না জনগণ। বরং দলের অপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি স্বচ্ছ রাজনীতির ধারায় ফেরার চেষ্টা করতে পারে আওয়ামী লীগ।

রাজনীতিক বিশ্লেষক সোহরাব হাসান বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে হত্যার বিচারের বিষয়টি একদিকে থাকবে; আবার নাগরিক ও আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাও থাকা উচিত। যারা অপরাধ করেছে সেগুলোতে ন্যায়বিচার হতে হবে। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দলের ভার নিয়েছেন। তার আগেও দলটা চলেছে। তখন নতুন নেতৃত্ব ছিল। ৪৩ বছর পর তো নতুন নেতৃত্ব আসতেই পারে।’

তবে, জুলাই আন্দোলনের ধারায় নতুন রাষ্ট্রকাঠামো ও রাজনৈতিক বন্দবস্তে তরুণদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন প্রাধান্য দেয়ার কথাও বলছেন এই বিশ্লেষক।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ