ভূমিকম্পের ঝুঁকি বিবেচনায় সমগ্র বাংলাদেশকে মোট তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চঝুঁকির আওতাভুক্ত অঞ্চলকে জোন-১, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা জোন-২ এবং জোন-৩-এর এলাকা নিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক মানচিত্রে দেশের ভূমিকম্প ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে।
কিছু দেশ রয়েছে যেগুলোতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। ওই দেশগুলো প্রধান ভূমিকম্পের ফল্টলাইন থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে ভূমিকম্প হয় না।
উত্তর-মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদে ভূমিকম্প ঝুঁকি অত্যন্ত কম। সবচেয়ে কাছের ফল্ট লাইন আফ্রিকা ও আরবীয় প্লেট সীমান্ত, যা দেশটি থেকে প্রায় ২ হাজার ১০০ কিলোমিটার দূরে। তবে বন্যা, খরা, দাবানলের মতো অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপদের ঝুঁকি রয়েছে। নাইজার কোনো প্রধান ফল্ট লাইনের কাছে নেই। ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম হলেও দেশটিতে বন্যা, খরা ও উচ্চ তাপমাত্রা জনজীবন প্রভাবিত করতে পারে।
পশ্চিম আফ্রিকার একটি দেশ আইভরি কোস্ট। সেখানে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেশ কম। স্থলবেষ্টিত দেশ বুরকিনা ফাসোতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম হলেও বন্যা, খরা ও আগুনের ঝুঁকি রয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং দীর্ঘ শুষ্ক মৌসুম কৃষি উৎপাদন প্রভাবিত করছে।
ক্যারিবীয় প্লেটের ফল্ট লাইন থেকে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাহামা। ভূমিকম্প খুবই বিরল হলেও উপকূলীয় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি বেশি দেশটিতে।
উত্তর ইউরোপের সুন্দর একটি দেশ ফিনল্যান্ড। তাদের সবচেয়ে কাছের ফল্ট লাইনও ২ হাজার ১০০ কিলোমিটার দূরে। তবে খনন বা বিস্ফোরণের কারণে মাঝেমধ্যে মানবসৃষ্ট ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ফিনল্যান্ডে বন্যা-দাবানলের মতো অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যাও বেশ কম।
উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক আফ্রিকান-ইউরেশিয়ান প্লেট সীমান্ত প্রায় ১ হাজার ৯৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে ডেনমার্কে খুব কম ভূমিকম্প হয়, হলেও মাত্রা থাকে কম।
প্রধান ফল্ট লাইন থেকে ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার দূরে থাকায় লাটভিয়ায় ভূমিকম্প দেখাই যায় না। তবে বসন্তকালে ভারি বৃষ্টিপাত ও বরফ গলনজনিত বন্যা হতে পারে। উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ডে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ উরুগুয়ে প্রধান ফল্ট লাইন থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হওয়ায় ভূমিকম্প বিরল। তবে উপকূলবর্তী অবস্থানের কারণে বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।