ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে অনুষ্ঠিত একটি স্বদেশি মেলা থেকে মুসলিম ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করার অভিযোগ উঠেছে। উচ্ছেদের শিকার ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের দামোহ জেলার একটি মাঠে আয়োজিত ওই মেলায় অংশ নিতে গিলে ‘মুসলিমদের অনুমতি নেই’ উল্লেখ করে তাদের বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বদেশি বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ওই মেলাটির উদ্দেশ্য ছিল স্ব-কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করা এবং দেশীয় স্থানীয় পণ্যগুলোর প্রচার বাড়ানো। কিন্তু মুসলিম ব্যবসায়ীদের বের করে দেওয়ার ঘটনাটি ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
মুসলিম ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, তারা অংশগ্রহণের ফি পরিশোধ করে মেলার স্টল বুক করলেও রোববার মেলা থেকে তাদের চলে যেতে বলা হয়। মেলাটি গত ১৪ অক্টোবর শুরু হয়েছিল এবং এটি চলবে আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত।
‘স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠন এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলার পোস্টারে বৈষম্যহীনভাবে একসঙ্গে বসবাসের ওপর জোর দিয়ে সাম্য, সম্প্রীতি ও জাতীয় ঐক্যের মতো আদর্শ তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু পোস্টারের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন বলে দাবি করেছেন উচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিরা।
উচ্ছেদ হওয়া আগ্রার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রশিদ বলেছেন, তারা আমার নাম জিজ্ঞাসা করে এবং আমার দোকান বন্ধ করে দেয়। এখানে আমাদের ১০টি দোকান ছিল। কিন্তু আয়োজকেরা আমাদের বলেছেন, মুসলমানদের প্রবেশ নিষেধ। আমাদের সমস্ত ভাড়া এবং যাতায়াতের খরচ বিফলে গেল।
লক্ষ্ণৌ থেকে মেলায় অংশ নিতে এসেছিলেন মুসলিম দোকানদার শাব্বির। তিনি বলেন, তারা (কর্তৃপক্ষ) আমাদের দোকান বসতে দিতে অস্বীকার করেছে এবং আমাদের চলে যেতে বলেছে।
ভাদোহি থেকে আসা ব্যবসায়ী ওয়াকিল আহমেদ বলেন, ওরা মুসলমানদের সরিয়ে দিচ্ছে। আমাদের প্রায় ১৫-২০ জনকে দোকান বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। তবে দামোহ জেলার কালেক্টর সুধীর কোচার বলেছেন, কারা মেলায় অংশ নেবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের আছে। যেহেতু তারা মেলার আয়োজন করেছে।
কোচার বলেন, আমি আমার কর্মকর্তাদের এই মামলাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। এটি কোনো সরকারি অনুষ্ঠান নয়, বরং স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের একটি অনুষ্ঠান। অংশগ্রহণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাদের আছে। তবে, আমরা সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করব এবং প্রয়োজনে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মেলায় বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীরা এখন গচ্চা অর্থ ফেরত পাওয়ার আশা করছেন।