পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১০০ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ভারত থেকে চাল আমদানির তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) স্থলবন্দরে ভারত থেকে ৪টি পণ্যবাহী ট্রাকে ১০০ মেট্রিক টন আতপ চাল এসেছে। চালগুলো আমদানি করেছেন আল আমিন এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে পহর ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সচরাচর এ এ বন্দরটিতে চাল আমদানি করা হয় না। সরকার অনুমতি দিলেই চাল আমদানি করা হয়। এর আগে দুই বছর আগে চাল আমদানি হয়েছিল। বিশেষ করে এ বন্দর দিয়ে বেশির ভাগ পাথরই আমদানি হয়ে থাকে।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ভৌগোলিক অবস্থান ও কৌশলগত কারণে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চারদেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে চালু হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এরপর ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এ বন্দর দিয়ে ভারতে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভুটানের সঙ্গে শুরু হয় পণ্য আমদানি-রপ্তানি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, চারদেশীয় স্থলবন্দর হিসেবে এ স্থলবন্দরটির গুরুত্ব অপরিসীম। বেশ কয়েক বার চাল আমদানি হয়েছিল। মাঝখানে কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর আবার চাল আমদানি হয়েছে। এভাবে যদি চালের পাশাপাশি বন্দর সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে ফলমূল আমদানি করা যায় তাহলে এখানে খাদ্যপণ্যের দাম কমবে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আল আমিন এন্টারপ্রাইজ পহর ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে। বিশেষ করে দূরত্বের কারণে এ স্থলবন্দর বন্দর দিয়ে চাল আমদানি করাটা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকটাই কম আমদানি করা হয়ে থাকে। মার্কেটিংয়ে সমস্যা হয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি, ভারতের এক্সপোর্টারদের সাথে কথা বলেছি, যাতে পণ্যের দাম কম রাখা হয়। যাতে সব কিছু মিলিয়ে আমদানিতে প্রফিট করতে পারেন আমদানিকারকরা। বিষয়টি নিয়ে আমি স্থলবন্দরের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, যেসব কমার্শিয়াল পণ্য রয়েছে চাল, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ আমদানিকৃত পণ্যগুলো যাতে নিরাপত্তার সাথে কাজ করে। সবার সাথে আমি মিটিং করেছি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহিন বলেন, ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরটি দিয়ে ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। এ পোর্ট দিয়ে যাতে আরও কিছু আমদানি করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলছি ও উদ্বুদ্ধ করছি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ১০০ মেট্রিক টন ভারতীয় আতপ চাল আমদানি করা হয়েছে। চালগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এভাবে নিয়মিত চালসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী পণ্য আমদানি করা হলে আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের দাম কমবে।