টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের সঙ্গে টাইগার বাহিনীকে আহত করেছে লঙ্কানদের উদ্যাপন। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেওয়া সেই উদ্যাপন যেন চোখ বন্ধ করলেও স্মৃতির মানসপটে ভেসে উঠছে ভক্তদের। পূর্ণ অধিনায়ক হয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত প্রথম পরীক্ষাতেই ফেল করেছেন।সিলেটের লাক্কাতুরায় ঘটে যাওয়া সেই ব্যর্থতার স্মৃতি হয়তো ভুলেই থাকতে চাইবেন তিনি। সিলেটের পরীক্ষা শেষে এবার নতুন পরীক্ষায় নামতে হবে চট্টগ্রামের সাগরিকায়। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের জন্য বন্দর নগরীতে পৌঁছে গেছে দুই দল। ২২ গজ নিয়ে পরিকল্পনাও শুরু করেছেন তারা। সেখানে শান্তদের জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে শান্ত বলেছিলেন, ‘সামনে আমরা কীভাবে খেলব, সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে প্রথম ওভারগুলো। এই সিরিজ থেকে আমরা অনেক আত্মবিশ্বাস নিতে পারি। ওয়ানডে ভিন্ন ফরম্যাট এবং আমরা সেই সিরিজের জন্য অপেক্ষায় আছি।’ তবে সেই অপেক্ষা যে সুখকর হবে, সেটি হলফ করে বলে দেওয়া কঠিন। অন্তত লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের বিগত পরিসংখ্যান কিছুটা হলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে। এখন পর্যন্ত ৫৪ বার মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ। যেখানে লঙ্কানদের ৪২ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের রয়েছে কেবল ১০টি। তাদের মধ্যকার লড়াইয়ের দুটি ম্যাচে কোনো ফল আসেনি। সবশেষ পাঁচ দেখার তিনটিতেই জয় রয়েছে অতিথিদের। দুটি বাংলাদেশের। গেল বছরের ৬ নভেম্বর ওয়ানডে বিশ্বকাপে সবশেষ দেখা হয়েছিল টাইগার-লায়নের। সেই ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে ম্যাচটিতে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড আউটের ঘটনা নিয়ে মূল খেলার থেকে আলোচনা-সমালোচনা বেশি হয়েছিল। সেই টাইমড আউটের ইস্যু থেকে এখনো বের হতে পারেনি লঙ্কানরা। তাই তো যখনই দলটি সময় পাচ্ছে বাংলাদেশকে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা করছে।সিলেটে বসে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, ‘ওরা এখনো টাইমড আউট থেকে বের হতে পারেনি। আমার মনে হয়, বের হওয়া উচিত। বর্তমানে থাকা উচিত। আমার মনে হয়, আমরা নিয়মের বাইরে কিছু করিনি। ওরা একটু বেশিই মাতামাতি করছে, করুক। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত না।’ বিষয়টি নিয়ে কুশল মেন্ডিস মনে করেন, ‘আমরা আমাদের উদ্যাপন করেছি। কারণ আমরা খুশি।’ তবে লঙ্কানদের সেই খুশির কারণটিই শান্তদের চ্যালেঞ্জকে আরো বড় করেছে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা চাইছে ভারত বিশ্বকাপের হারের প্রতিশোধটি ৫০ ওভারের ম্যাচ দিয়েই নিতে। ঘরের মাটিতে খেলা হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পাবে টাইগার বাহিনী। সে দিক থেকে লড়াইটা জমজমাট হতে চলেছে। নতুন অধিনায়ক হিসেবে খানিকটা বাড়তি চাপ নিয়ে মাঠে নামতে হচ্ছে শান্তকে। প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে অর্জনটা কী? এমন প্রশ্নই সেই চাপের উত্সস্থল। তবে সেটি খানিকটা কমানোর জন্য মাঠে থাকবেন মেহেদী হাসান মিরাজ-মুশফিকুর রহিমরা। বিপিএলে শিরোপা জয়ের পেছনে মুশফিকের অবদানের কথা সকলেই জেনেছেন। নিজের অভিজ্ঞতাকে শ্রীলঙ্কা সিরিজে কাজে লাগাতে পারলে কিছুটা স্বস্তি মিলবে শান্তরও। মিস্টার ডিপেন্ডেবলও তেমনটি হয়তো ভাবছেন। সেজন্য সিলেট থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন। তার সঙ্গে ছিলেন মিরাজও। এবার চট্টগ্রামে অনুশীলনে নামবেন তারা। লক্ষ্য মাঠের খেলায় দলকে এগিয়ে রাখা।