সিরাজগঞ্জের বেলকুচির হুড়াসাগর নদীর ওপর নির্মিত সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাতের আঁধারে ওই ফাটল মেরামত করতে গেলে তাতে বাধা দেয় গ্রামবাসী। পরে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারের লোকজন। বেলকুচি উপজেলার চর জোকনালা গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, ব্রিজের নিচে মোবাইলের আলো দেখে আমরা চোর মনে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাই। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন পালানোর চেষ্টা করলে তাদের ধরে ফেলি। তখন তারা জানায় যে, পিলারের ফাটল মেরামত করতে এসেছেন। পিলার মেরামতের কাজে আসা রাজমিস্ত্রি শফিকুল ও স্বাধীন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে রাতের বেলায় বালু ও সিমেন্ট দিয়ে পিলারের ফাটলের স্থান মেরামত করতে গিয়েছিলেন তারা। স্থানীয় ভাঙ্গাবাড়ী ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম তুহিন জানান, ব্রিজটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ব্রিজের চারটি পিলারের মধ্যে একটির নিচের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেলকুচি উপজেলা এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) অফিসের সার্ভেয়ার মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালে সেতুটির নির্মাণ শুরু হয়। সে সময়ে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বদলি হয়ে যাওয়ায় ২০২৩ সাল থেকে আমিই নির্মাণ কাজের দেখভাল করছি। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি নদীর পানি থেকে সেচ দেওয়ার সময় ফাটলের স্থানটি নজরে আসে। গ্রামবাসীর বাধার কারণে শুক্রবার থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। বেলকুচি ইঞ্জিনিয়ার ছুটিতে ঢাকায় রয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ও সাগর কন্সস্ট্রাকশন (জেভি) ব্রিজের নির্মাণ কাজ করছে। সাগর কন্সস্ট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের লাইসেন্স ব্যবহার করে ঠিকাদার জহরুল ইসলাম ব্রিজের কাজটি করছেন। বর্ষা মৌসুমে স্টিলের ফর্মা দিয়ে পিলার ঢালাই করার সময় হানিকম্ব (ঢালাই এর পর কংক্রিটের মধ্যে ছোট ছোট ফোকর বা গর্ত) হওয়ায় সমস্যাটি দেখা দিয়েছিল। পরবর্তীতে প্রকৌশলীদের পরামর্শে পানি সেচে পিলারটি মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গ্রামবাসী এ কাজে বাধা দিতে পারেন এ জন্য পিলারটি মেরামতের জন্য রাতে মিস্ত্রিদের পাঠানো হয়েছিল। সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বলেন, বিশেষজ্ঞ টিম প্রেরণের জন্য কর্তৃপক্ষকে অবিহিত করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে টিম আসবে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।