মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন

হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৭ প্রদর্শন করেছেন

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালানো শেখ হাসিনা এখনও “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী”, সোশ্যাল মিডিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে ছড়িয়ে পড়া একথা মিথ্যা।

শেখ হাসিনাকে নিয়ে এ ধরনের কোনও মন্তব্য করেননি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে বুধবার (২০ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থাটি বলেছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ‘শেখ হাসিনাকে এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ বলেছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। কিন্তু আদতে ওই সাক্ষাৎকারে এমন কোনও কথাই বলেননি তিনি। এমনকি বাংলাদেশ প্রসঙ্গেও ওই সাক্ষাৎকারে কোনও মন্তব্য করেননি আগামী জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাওয়া ট্রাম্প।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণবিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের কয়েক মাস পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্টে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যেহেতু শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, তাই তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’।”

মূলত শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখেননি বলে সম্প্রতি স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করার পর হাসিনার পদত্যাগ ‘অবৈধ হওয়ার’ ইস্যুটি সামনে আসে।

এএফপির প্রতিবেদনে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে গত ৯ নভেম্বর বাংলা ভাষায় দেওয়া একটি পোস্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, “পিবিডিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন— শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশ সরকারের অবৈধ দখলদারদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘যারা বলছেন— শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, তারা আমাকে পদত্যাগপত্রটি দেখান’।”

ফেসবুকের সেই পোস্টের সঙ্গে একটি ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। ওই ছবিতে পিবিডি পডকাস্টের উপস্থাপক প্যাট্রিক বেট-ডেভিডের সঙ্গে বসে ট্রাম্পকে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। ছবির ওপর বাংলায় লেখা, “আমি মনে করি হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী : ট্রাম্প”। একই ধরনের দাবি করে ফেসবুকে আরও অনেক পোস্ট দেওয়া হয়েছে।

বার্তাসংস্থা এএফপি বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখেননি বলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে মন্তব্য করার পরই শেখ হাসিনাকে নিয়ে ট্রাম্পের নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় একথা ছড়ায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান। সেদিনই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ঘোষণা দেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প মূলত পিবিডি পডকাস্টকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি নেতৃত্ব বা হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে কোনও কথাই উল্লেখ করেননি।

ট্রাম্প সেই সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন নির্বাচনের আগে

গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আর এর আগেই গত ১৭ অক্টোবর ট্রাম্পের ওই সাক্ষাৎকারটি পিবিডি পডকাস্ট নামের একটি ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়।

ভিডিওটির শিরোনাম ছিল “ডোনাল্ড ট্রাম্প গেটস ইমোশোনাল-স্পিকস অন ট্যারিফস, ওবামা অ্যান্ড ইরান”। প্রায় দেড় ঘণ্টার ওই ভিডিওতে শেখ হাসিনা বা বাংলাদেশ নিয়ে কোনও কথাই বলেননি ট্রাম্প।

এছাড়া ট্রাম্পের ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ। সেখানেও বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের কথা বলার কোনও প্রমাণ মেলেনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ