নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় (২৩ জানুয়ারি, মঙ্গলবার) র্যাব-৭ চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড এবং পতেঙ্গা এলাকায় পৃথক দুইটি অভিযান পরিচলনা করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ২ আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
র্যাব-৭ চট্টগ্রাম বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার মামলা নং-১৪, ৩০/০৯/২০১৫ ধারা -১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/৩০২ পেনাল কোড-১৮৬০ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি মোঃ আউয়াল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে ছদ্মবেশে দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত (২৩ জানুয়ারি, ২০২৪) র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এর যৌথ অভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ আউয়াল (৩৯), পিতা-আবু তাহের@ জর্দ্দা, সাং-পশ্চিম লথিফ পাড়া, থানা- চন্দ্রগঞ্জ, জেলা- লক্ষীপুর’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উল্লেখিত নাম ঠিকানা প্রকাশ করে বর্ণিত হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে। এছাড়াও আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, উক্ত হত্যাকান্ডের শিকার নিহত ভিকটিম ওমর ফারুক লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
রাজনৈতিকভাবে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ভিকটিমের বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত বিরোধের প্রেক্ষিতে গত ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং সকালে বাড়ি থেকে ভিকটিম ফারুককে ডেকে নিয়ে ধৃত আসামি আউয়াল ও তার অন্যান্য সহযোগীরা পথিমধ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে গুলিবিদ্ধ গুরুত্বর আহত অবস্থায় ফারুককে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। উক্ত হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ০৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ০৮ জনের বিরুদ্ধে লক্ষীপুর জেলার চন্দগ্রঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৪ জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশি প্রতিবেদন দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলায় ০৯ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। যার মধ্যে ধৃত মোঃ আউয়াল অন্যতম আসামি।
অপর একটি তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ জানতে পারে যে, লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার মামলা নং-২৫, ১০ জুন ২০১৪ ধারা-১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০৭/৩০২ পেনাল্টি কোড এর গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি ফারুক @ ওমর ফারুক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে ছদ্মবেশে ১০ বছর যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ অভিযানিক দলটি বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি ফারুক @ ওমর ফারুক (৩৫), পিতা-সৈয়দ আহম্মেদ, গ্রাম-পাঁচপাড়া, থানা-চন্দ্রগঞ্জ, জেলা- লক্ষীপুর’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উল্লেখিত নাম ঠিকানা প্রকাশ করে হত্যা মামলার পলাতক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।