সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০ অপরাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গে এবার স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৫ প্রদর্শন করেছেন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আরজি কর হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার জয়নগর শহরের কুলতলি এলাকায় শুক্রবারের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকে রণক্ষেত্র হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা।

আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, জয়নগরের মহিষমারি এলাকায় একটি জলাভূমি থেকে শুক্রবার রাতে ৯ বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।

নিহত শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, দুপুরে কোচিং সেন্টারে পড়তে গিয়েছিল ওই শিশু। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। কিন্তু কোচিং থেকে আর বাড়ি ফেরেনি।

পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাতে তারা মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে শিশু নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানাতে গেলে তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। জয়নগর থানায় যেতে বলেছিল পুলিশ, অভিযোগ পরিবারের। তাদের বক্তব্য, রাতে অভিযোগ পাওয়া মাত্র পুলিশ তৎপর হলে শিশুটিকে হয়তো বাঁচানো যেত।

পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাত থেকেই বিক্ষোভ করতে থাকে উত্তেজিত জনতা। শনিবার সকালে জয়নগর মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে শুরু করে বিক্ষোভ। খবর পেয়ে পুলিশবাহিনী সেখানে এলে জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘেরাও করে রাখে উত্তেজিত জনতা। এক পুলিশকর্মীকে ঝাঁটাপেটা করতে দেখা যায় স্থানীয় নারীদের।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসনকে পুলিশের বিশেষ বাহিনী নামাতে হয়। লাঠিচার্জও করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস।

বারুইপুর পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, স্থানীয়দের বিক্ষোভে ১২ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।

 

পুলিশ সুপার বলেন, ‘পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে। আমাদের পুলিশের পুরো টিম এখানে আছে।’

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে মহিষমারি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। আমরা রাত ৯টা নাগাদ খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করি। কোথা থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়েছিল, কে শেষ বার তাকে দেখেছিল, এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল তখনই। সাধারণত কোনো শিশু নিখোঁজ হলে অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে রাতে অভিযুক্তকে চিহ্নিতও করা হয়। জয়নগর থানায় সাড়ে ১২টার দিকে মামলা দায়ের হয়েছে। তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তকে। অপরাধের কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। পুলিশ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করেছে। তার পরেও এলাকায় ক্ষোভ কেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

পুলিশের কেউ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ  নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে পুলিশ।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জয়নগরে পৌঁছেছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার, প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি আকাশ মাঘারিয়া-সহ একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে।

 

ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল রোববার কুলতলি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে কুলতলী থানা ঘেরাও অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ