গাজায় ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে ইসরাইলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রস্তাব আয়োজন হয়েছিলো মার্কিন সিনেটে। তবে ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহ আটকাতে উত্থাপিত তিনটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে খারিজ হয়ে গেছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বার্নি স্যান্ডার্সসহ ও ডেমোক্র্যাট সিনেটর কতিপয় সদস্য এই প্রস্তাবগুলোর পক্ষে ভোট দেয়।
কিন্তু ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের সিংহভাগ সিনেটরদের বিরোধিতার কারণে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ হয়েছে। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
জানা গেছে, অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন সিনেটে তোলা প্রস্তাবের পক্ষে মাত্র ১৮টি ভোট পড়ে, বিপক্ষে পড়ে ৭৯ ভোট। অন্য দুটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ২০টিরও কম।
মার্কিন সিনেটে প্রধান দুই দলই মূলত ইসরাইলের পক্ষে। তাই সিনেটে ইসরাইলের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, এমন প্রস্তাবগুলো পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
বর্তমান বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির কথা বললেও, ইসরাইলকে অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে।মার্কিন প্রশাসন মনে করে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানসহ অন্যান্য হুমকির মুখে ইসরাইলের সুরক্ষা নিশ্চিতে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ বজায় রাখা প্রয়োজন।
অবশ্য প্রস্তাবগুলোর পক্ষে থাকা আইনপ্রণেতাদের আশা, ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ পাস না হলেও এক ধরনের সচেতনতা তৈরি হবে ভবিষ্যতে।
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ১৩ অক্টোবরের চিঠিতে ইসরাইলি প্রশাসনকে লিখেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন ৩৫০টি ত্রাণের ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে চায়।
ইসরাইলি সামরিক সংস্থার মতে, অক্টোবরের শেষের দিকে এই বছরের অন্য যেকোনো মাসের তুলনায় কম ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। এতে জানা যায়, দৈনিক গড়ে ৫৭ ট্রাক প্রবেশ করেছে গাজায়। যা একেবারেই অপ্রতুল।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র প্যাটেল জানিয়েছেন, নভেম্বর ১ থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত, মাত্র ৪০৪ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবরে ইসরাইলি সীমান্ত পেরিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।ওইদিন থেকেই গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে ইসরাইল।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, এ পর্যন্ত ইসরাইলের হামলায় ৪৪ হাজারের কাছাকাছি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষ।
অন্যদিকে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে গাজায় ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের বসবাস ছিল। তখন থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।