পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর র্যাগিং ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার ৫ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাত আড়াইটায় এম কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা হচ্ছেন স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪ সেশন) ছাত্র হাসিবুর রহমান সবুজ, অভিজিৎ শর্মা, মৃদুল পাল, তোহাদিন নূরুল ও হাসিবুল ইসলাম নাহিদ।
শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাদের দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে র্যাগিংয়ে গুরুতর আহত শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান সবুজকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর শহিদুল হাসান শাহীন এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২৩-২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, শনিবার গভীর রাতে এম কেরামত আলী হলের একটি কক্ষে র্যাগিংয়ের নামে তাদের নির্যাতন করা হয়। এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে আরও জানা যায়, সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এসে তাদের সবার ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। পরে তাদের কান ধরে উঠা বসা করানোসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। অনেক সময় তাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
এদিকে এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর সমালোচনা শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
র্যাগিংয়ের প্রতিবাদে ২০২৩-২৪ সেশনের ভর্তিকৃত নবীন শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছেন। রোববার কোনো অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীরা ক্লাস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেননি। এছাড়া অভিযুক্তদের শাস্তি কার্যকর না হলে ক্লাশে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
ঘটনার বিষয়ে পবিপ্রবির প্রক্টর প্রফেসর ড. আবুল বাশার খান এই প্রতিবেদককে বলেন, র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত ৭ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মামুন অর রশিদ যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত ৭ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।