ঢাকার মাতুয়াইলে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কলেজের সামনে তিনি বলেছেন, এখনও মামলা করিনি, আজ করব। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রাথমিক ধারণা ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। আরও বেশি হতে পারে।
পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেলে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। পূর্বঘোষিত সেই ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ও পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মোল্লা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ওই সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ কেন্দ্রে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গণ্ডগোলের মধ্যে নিরাপত্তার কারণে মাঝপথে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
ওই হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদে সোমবার ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচির ডাক দেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর অংশ হিসেবে তারা ডেমরা সড়কসংলগ্ন মোল্লা কলেজে গেলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। প্রায় দুই ঘণ্টার সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। মোল্লা কলেজে ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাটও হয়।
এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই কাম্য নয় মন্তব্য করে মোল্লা কলেজের অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই নিজের প্রতিষ্ঠান মনে করতে হবে; কিন্তু দেশে যে ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি হচ্ছে- এটা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে বিরত থাকার জন্যে আহ্বান জানাই, দেশকে বাঁচিয়ে রাখি। আজকে যে অপূরণীয় ক্ষতি হলো তা বলার মতো নয়।
তিনি বলেন, সোমবারের ঘটনার বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে তারা সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
সংঘাতের পেছনে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যক্ষ নয়ন বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনই ছিল। আগেও কুচক্রী মহল ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কুচক্রী মহল এটার সুযোগ নিয়েছে; কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দল সম্পৃক্ত কিনা সেটা আমার জানা নেই।
পরপর দুই দিনের সহিংসতার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, ৩৫টি বিভিন্ন কলেজ শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ইউনাইটেড কলেজ অব বাংলাদেশ (ইউসিবি) নামে ফেসবুকে একটি ফোরাম সক্রিয় রয়েছে।
অপরদিকে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ ও সরকারি কবি নজরুল কলেজ মিলে সাত কলেজের ছাত্রছাত্রীদের একটি জোট রয়েছে।
পরপর দুই দিনের হামলাতেই সংশ্লিষ্ট কলেজ ছাড়াও তাদের জোটভুক্ত অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে, বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এটা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।