সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৯ অপরাহ্ন

নেপালে চীনা অর্থায়নে বিমানবন্দর, ‘ঘুম হারাম’ ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭ প্রদর্শন করেছেন

একদিকে যখন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক টালমাটাল, তখন নয়াদিল্লির চিন্তা বাড়িয়ে চীনের সঙ্গে হৃদ্যতা বাড়াচ্ছে আর এক প্রতিবেশী দেশ নেপাল। সম্প্রতি চার দিনের চীন সফর সেরে দেশে ফিরে গিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। শুক্রবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের তিনি জানান, এই সফরে চীন-নেপাল সম্পর্ক আরও পোক্ত হয়েছে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প (বিআরআই)-সহ আরও নানা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে অন্তত ১০টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তার মতে, এগুলি আগামী দিনে নেপালকে আর্থিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ করবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে ওলি জানান, বিআরআই প্রকল্পের জট কাটাতে দু’পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ চীনের একটি বড় বাজেটের আন্তর্জাতিক প্রকল্প। যার মাধ্যমে নতুন নতুন সড়ক, রেল ও বিমানপথ তৈরি করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এমনকি ইউরোপ পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়তে চায় বেইজিং। ২০১৭ সালে এই প্রকল্পে যোগ দেয় নেপাল। কিন্তু নানা বাধায় নেপালে এই প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে। সেই জট কাটাতে কথা হয়েছে দু’পক্ষের। এই সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন ওলি। কথা হয়েছে চীনা প্রধানমন্ত্রী ও অন্য উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গেও। বিআরআই ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, ২০২৫-২৯ পর্যন্ত উন্নয়নমূলক প্রকল্প— এ সব নিয়েও চুক্তি হয়েছে। চীনা বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ওলি। নেপালে বেড়াতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চীনের সাধারণ মানুষকেও।

এই বিআরআই প্রকল্পের প্রকৃত অভিসন্ধি নিয়ে জল্পনা রয়েছে নানা মহলে। অনেকের মতে, উন্নয়নের নামে চীনের পাতা এই ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছে একাধিক দেশ। ছোট ছোট দেশকে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের নামে অর্থ ধার দিচ্ছে বেইজিং। পরে সেই ঋণ শোধ করতে না-পারলে পুরো প্রকল্পটাই নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে চীন। কিংবা সেই দেশে আরও আধিপত্য বিস্তার করছে। বিআরআই-এর ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, প্রকল্প বিস্তারের নামে বহু দেশের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় নিরাপত্তা খর্ব করেছে চীন। বিরোধী দলগুলি তো বটেই, এই প্রকল্পে যোগ দেওয়া নিয়ে ওলি সরকারের জোট শরিক নেপাল কংগ্রেসেরও দ্বিমত রয়েছে। চীনের থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়ার ঘোর বিরোধী তারা।

এর আগে নয়াদিল্লির আপত্তি অগ্রাহ্য করে পোখরা বিমানবন্দরের কাজে চীনের থেকে ২০ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা নিয়েছিল নেপাল। গত বছর ওই বিমানবন্দর খোলা হয়। এখনো লাভের মুখ দেখেনি বিমানবন্দরটি। ভারত সীমান্তের খুবই কাছে এই বিমানবন্দর। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, সামরিক বিমান ঘাঁটি হিসেবে পোখরা বিমানবন্দরকে ব্যবহার করতে পারে বেইজিং। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরে ওই এলাকা বরাবর দেশের আকাশসীমা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। সেই আশঙ্কার রেশ কাটার আগে এ বছর প্রথা ভেঙে ভোটের পরে ভারত সফরে না এসে চীন ঘুরে চিন্তা বাড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ