অবশেষে বাগে এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলোচিত বাঘিনী জিনাত! গত নয়দিন ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বন দপ্তরকে নাকানিচোবানি খাইয়ে, তিনটি জেলা দাপিয়ে খাঁচাবন্দি হয়েছে বাঘিনী জিনাত।
নানা টোপ ও ফাঁদ পার করে বেরিয়ে গিয়েছিল বাঘিনী জিনাত। তবু তৎপরতা চালিয়ে গেছে বন দপ্তর। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বাঘিনী জিনাতকে ফিরে পায় বন দপ্তর।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওড়িশার শিমলিপাল জঙ্গল থেকে ঝাড়খণ্ হয়ে ঝাড়গ্রাম, তারপর পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় দাপিয়ে বেড়িয়েছে বাঘিনী জিনাত। এখন তাকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পালা।
চ্যালেঞ্জ কম ছিল না। শেষমেশ তা পার করে ফেলল বন দপ্তর। শনিবার তাকে টার্গেট করে ট্রাঙ্কুলাইজার দেওয়া হলেও, তা জিনাতের গায়ে লেগেছিল কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। তবে এরপরই স্ট্র্যাটেজিতে বদল আনে বন দপ্তর।
৯ দিন আগে ঝাড়খণ্ডের কুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা হয়ে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার কাটুচুয়া জঙ্গলে ঢুকেছিল বাঘিনি জিনাত। তার পর দু’দিন ধরে কখনও ময়ূরঝর্ণার জঙ্গলে, আবার কখনও কাকড়াঝোড় জঙ্গলে নিজের ঠিকানা বদল করছিল সে।
পরে তেলিঘানার জঙ্গল হয়ে জ়িনত প্রবেশ করে পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান থানা এলাকার রাইকা পাহাড়ে। রাইকা পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী ভাঁড়ারি পাহাড়ে দিন চারেক কাটিয়ে মানবাজারের ডাঙ্গরডিহির জঙ্গলে হাজির হয় সে।
সেখান থেকেই শুক্রবার ভোরের দিকে জ়িনত কুমারী নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়ে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের গোঁসাইডিহির জঙ্গলে। বন দপ্তরের লাগাতার চেষ্টায় রোববার সন্ধ্যায় সেখানেই ধরা দেয় বাঘিনি।
শনিবার সকালে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থামার আওতায় গোঁসাইডিহি গ্রামের লাগোয়া এক জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘিনী জিনাত। প্রথমেই বাঘিনীর অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। এরপর তাকে ট্রাঙ্কুলাইজার দিয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি করা হয়।
তবে তাতেও কাজে দেয়নি। বাঘিনী জঙ্গলের লুকিয়ে গিয়েছিল। বাঘিনীর গলায় ছিল তাকে ট্র্যাক করার জন্য রেডিও কলার। তবে শনিবারের পর জঙ্গল ধীরে ধীরে ঘিরে ফেলে কিছু জায়গায় নিয়ন্ত্রিতভাবে আগুন লাগিয়ে তাকে ধরার স্ট্র্যাটেজি স্থির হয়। সেই কৌশলেই আসে সাফল্য। শেষমেশ বাঘিনী বন্দি হয়।
এদিকে, বাঘিনী ধরা পড়তেই এলাকাবাসীর স্বস্তি ফিরে আসে। বন দপ্তর থেকে জানানো হয়, ‘সেফ প্যাসেজ’ দিয়ে জিনাতকে নিয়ে যাওয়া হবে।
বাঁকুড়ার মুখ্য বনপাল এস কুলানডাইভেল বলেন, কয়েকদিন ধরে অফিসারদের ঘুম নেই। এটা আমাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব ছিল। তবে অন্য সবাই আমাদের সমর্থন করেছে। সবার সমর্থন পেয়েছি।