নেত্রকোনায় নিষিদ্ধ-ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নেত্রকোনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এস আই) আকামল হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেন। এতে জেলা ছাত্রলীগের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়সহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পরে আটক ছয়জনসহ ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
শনিবার বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হলে বিচারক আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতার হওয়া নেতা-কর্মীরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি চিন্ময় সরকার, সহক্রীড়া সম্পাদক সন্দীপ সরকার, সদস্য সিন্ধ বণিক ওরফে বিশাল, সদস্য সাকিব হাসান খান ওরফে হাসিব, সদস্য সুজয় খান, উপ সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান ওরফে প্রান্ত, সাবেক সদস্য লোকমান হোসেন, নেত্রকোনা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জয় সাহা, বর্তমান সদস্য রাহুল রায় এবং সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি সৈয়দ তোফায়েল আহমেদ ওরফে তুষার।
এলাকার বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৌশিক রায়ের নেতৃত্বে বড়বাজার এলাকা থেকে একটি ঝটিকা মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক তেরীবাজার দিয়ে ছোটবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসে। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে যাওয়া হয়।
ঝটিকা মিছিলটির ভিডিও আওয়ামী যুব-জাগরণ মঞ্চসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজ থেকে শেয়ার করা হয়। শেয়ার করা দুই মিনিট ২০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, কৌশিক রায় মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ শেখ শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। তার পেছনে ২০ থেকে ২২ জন নেতা-কর্মীও স্লোগান দিচ্ছেন।
ঘটনার পর পুলিশ ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা ও স্থানীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান চালিয়ে ওই দিন দুপুরে ছয়জনকে আটক করে। পরে রাতে কৌশিক রায়কে প্রধান করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার পর পর আরও চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ যুগান্তরকে বলেন, ‘নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল বের করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ঘটনায় মামলা হযেছে। এ পর্যন্ত ১০ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামীদের আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’