মারধরের শিকার হয়ে ফিরে যাওয়ার এক বছর পর দ্বিতীয়বার হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে এসে স্বামী ও সতীনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন পাকিস্তানি তরুণী মাহা বাজোয়া।
গত ৬ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক কামরুল হাসান তা এফআইআরভুক্ত করার জন্য চুনারুঘাট থানা পুলিশকে আদেশ দেন। দুবাইয়ে কাপড়ের ব্যবসায়ী মাহা বাজোয়া পাকিস্তানের লাহোরের গাজী রোডের পাঞ্জাব সোসাইটির বাসিন্দা মকসুদ আহমেদের মেয়ে।
স্বামী চুনারুঘাট পৌরসভার বড়াইল গ্রামের সফি উল্যা মজুমদারের ছেলে সাজ্জাদ হোসাইন মজুমদার ওরফে হিরা। তার দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া আক্তারকে এ মামলায় প্রধান আসামি করেছেন ওই পাকিস্তানি তরুণী। অন্য ১২ আসামি হলেন- হিরার আত্মীয়-স্বজন এবং মাহা ও সোনিয়ার সঙ্গে তার বিয়ের কাজীসহ জড়িতরা।
মাহার অভিযোগ, দুবাইয়ের একটি ক্লাবে তাদের দুজনের পরিচয় ও প্রেম হয়। অনেকদিন প্রেমের পর ২০১৪ সালে লাহোরে ১০ লাখ পাকিস্তানি রুপি দেনমোহরে মাহাকে বিয়ে করেন হিরা। শর্ত থাকে, হিরা মাহাকে তালাক দিতে চাইলে ২০ লাখ রুপি পরিশোধ করবেন এবং প্রতিমাসে আরও ৫০ হাজার রুপি ভরণপোষণ দেবেন।
বিয়ের পর ২০১৮ সালে হিরা মাহাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। পরে মাহা পাকিস্তান এবং হিরা দুবাইয়ে চলে যান। ২০১৯ সালে দুবাইয়ে নাসির উদ্দিন সেলিম নামে এক ব্যক্তির গাড়িচালকের চাকরি নেন হিরা। এর সুবাদে তার স্ত্রী সোনিয়ার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে ওই নারীকেও বাংলাদেশে এনে বিয়ে করেন।
সোনিয়া সেলিমের স্ত্রী থাকা অবস্থায় হিরাকে অবৈধভাবে বিয়ে করেছেন উল্লেখ করে এই বিয়ের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার চেয়েছেন পাকিস্তানি মাহা বাজোয়া। এ ব্যাপারে মাহা জানান, তিনি হিরাসহ প্রতারণায় সঙ্গে জড়িত সবার বিচার চেয়েছেন আদালতে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চুনারুঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মাহার কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, এই মামলা দায়েরের আগে মাহা ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর স্বামীর খোঁজে চুনারুঘাটে আসেন। সেখানে স্বামী হিরার ভাইয়ের বাড়িতে তিনি অবস্থান নেন। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ আদালতে দুটি মামলা এবং চুনারুঘাট থানায় মারপিটের অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন।