বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৩ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগ অফিসে যুবকের লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১ প্রদর্শন করেছেন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসের ভিতরের রুম থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ভৈরব বাজার হলুদপট্টির কাছে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ভিতরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি রুমে লাশটি পাওয়া যায়।

 

লাশের সঙ্গে একটি ইনহেলার (অ্যাজমার জন্য ব্যবহৃত) ও একটি অ্যানড্রোয়েড মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। নিহত যুবকের পরনে ছিল একটি প্যান্ট। তবে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।

 

নিহতের নাম মো. শফিক মিয়া (৩৫)। তিনি কিশোরগঞ্জের  কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের মো. সামসু মিয়ার ছেলে। তিনি মিষ্টির দোকানের কর্মচারী ছিলেন।

 

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট বিগত সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ অফিসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। অফিসের ভিতর দুটি রুম রয়েছে। তার মধ্য দক্ষিণ দিকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ অফিস, উত্তর দিকে উপজেলা যুবলীগ অফিস ও পশ্চিম দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিস। সবগুলো অফিসের দরজা জানালা, আসবাবপত্র না থাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বিগত সরকার পতনের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ দলের অঙ্গ-সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীকে অফিসগুলোতে দেখা যায় না। ওই যুবককে কে হত্যা করল বা কিভাবে মারা গেল কেউ বলতে পারছেন না।

 

জানা গেছে, স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বুধবার দুপুর ১২টায় পরিত্যক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনের মাঠে তার মোটরসাইকেল রাখতে গিয়ে রুমের ভিতর লাশটি দেখতে পান। পরে লোকজনের মধ্য ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় উৎসুক জনতা লাশ দেখতে ভিড় জমান। এ সময় জনতা পুলিশকে খবর দেন।

 

আদুরি মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের ম্যানেজার বিকাশ দেব জানান, গত এক সপ্তাহ আগে শফিক মিয়া আমাদের দোকানে দৈনিক বেতনে চাকরি নেন। চাকরি নেওয়ার পর দেখলাম তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে চাকরির ৭ দিনের মধ্যে তিনি ৪ দিন ডিউটি করেন। বুধবার সকাল ৯টার দিকে ইনহেলার (শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত) কেনার জন্য সে ৩০০ টাকা চায় এবং দুই দিনের ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করে। তখন আমি টাকা দিয়ে ছুটি মঞ্জুর করি। তারপর তিনি দোকান থেকে বের হয়ে যান। ৪ ঘণ্টা পর পুলিশের কাছে খবর পাই তার লাশ পাওয়া গেছে। কিভাবে তিনি মারা গেলেন বলতে পারব না। তবে আমার ধারণা অসুস্থতার কারণে তিনি মারা গেছেন।

 

তার বড় ভাই জনি মিয়া বলেন, আমি ফেসবুকে তার ছবি দেখে বিকাল ৩টায় ভৈরব থানায় ছুটে এসে লাশ শনাক্ত করি। আমার ভাই বিবাহিত ও তার একটি ২ বছর বয়সি ছেলে আছে। আমার ভাইয়ের শ্বাসকষ্ট রোগ আছে দীর্ঘদিন যাবত। যখনই তার শ্বাসকষ্ট হয় তখনই তিনি মাটিতে শুয়ে পড়েন। এই অভ্যাস অনেক দিনের। তার কোনো শত্রু সেই। বাড়ি থেকে বের হয়ে ভৈরবে এসে বিভিন্ন কাজ করত সে। গত ২৫ দিন আগে বাড়ি থেকে এসেছিল। আজ তার মৃত্যুর খবর পেলাম। কিভাবে সে মারা গেল তা জানি না। অসুস্থতার কারণে মারা যেতে পারে বলে তার ধারণা।

 

ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফূয়াদ রোহানী সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পুলিশসহ আমি  ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এ সময় দেখা যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত অফিসের ভিতরের একটি রুমে লাশটি ফ্লোরে পড়ে আছে। লাশের সঙ্গে একটি ইনহেলার ও একটি মোবাইল পাওয়া যায়। এ সময় পুলিশ তার মোবাইলের কলরেকর্ড দেখে মিষ্টির দোকানের নম্বর পায়। পরে দোকানে যোগাযোগ করার পর ম্যানেজার বিকাশ দেব লাশ দেখে তাকে চিনতে পারেন। এরপর নিহতের ভাই এসে তার লাশ শনাক্ত করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ