সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন

আধিপত্য বিস্তারে তিতাস আ.লীগের দুই গ্রুপের উত্তেজনা, আটক ৭

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫
  • ৩ প্রদর্শন করেছেন

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের মানিককান্দি গ্রামে আওয়ামী লীগের আবুল মোল্লা গ্রুপ ও সাইফুল মেম্বার গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুই গ্রুপেই বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সজ্জিত হয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

 

এ সময় তিতাস থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বহিরাগত ৭ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

 

আটককৃতরা হলেন- মানিককান্দি গ্রামের  মৃত মনু মিয়ার ছেলে শাহজাহান (৫৫), বহিরাগত দাউদকান্দি উপজেলার টামটা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে রায়হান (২১), একই গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে জিসান মাহমুদ (২০), মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. আরিফ (২০), মো. আলম মিয়ার ছেলে মো. আশরাফুল (২০), মনির হোসেনের ছেলে মো.ফয়সাল (২১) ও রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. মাঈনুদ্দিন (২০)। তারা সবাই আওয়ামী লীগ নেতা আবু মোল্লার ভাড়া করা।

 

সরেজমিন জানা যায়, ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভিটিকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মানিককান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা জহির মোল্লাকে (৩৫) দিনদুপুরে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের আওয়ামী লীগের অনুসারী সাইফুল মেম্বারের লোকজন।

 

ওই ঘটনায় নিহত জহির মোল্লার ছোট ভাই এসহাক মোল্লা জুয়েল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করলে সাইফুল মেম্বারসহ ৪০টি পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সুযোগে আবু মোল্লার লোকজন হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িঘরে লুটপাট অগ্নিসংযোগ এবং ঘরসহ খুলে নিয়ে যায়। দুই বছর গ্রামে ঢুকতে দেয়নি সাইফুল মেম্বারের লোকজনকে। তারই জেরে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলে সাইফুল মেম্বারের লোকজন গ্রামে ঢুকে আবু মোল্লাসহ তার লোকজনকে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করে এবং কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘরে লুটপাট অগ্নিসংযোগ করাসহ মৎস্য প্রজেক্ট থেকে মাছ লুট করে নিয়ে নেয়।

 

দীর্ঘ ১১ মাস পর রোববার সকালে আবু মোল্লার গ্রুপ দলবল নিয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গ্রামে প্রবেশ করেন। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তিতাস থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বহিরাগত ৬ জনসহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

 

বর্তমান মানিককান্দি গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবারও যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

 

এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদউল্যাহ বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা ও সাইফুল মেম্বারের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। আবু মোল্লার লোকজন ৫ আগস্টের পর থেকে গ্রামছাড়া। আজ আবু মোল্লার লোকজন গ্রামে এলে সাইফুল মেম্বারের লোকজন বাধা দেন এবং উভয়ের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং ৭ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসি। এখন মানিককান্দি গ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ