শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন

গাজার হাসপাতালগুলো ‘ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে’: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৫ প্রদর্শন করেছেন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস সতর্ক করে বলেছেন, উত্তর গাজায় ইসরাইলের অভিযান অবশিষ্ট হাসপাতালগুলোকে ‘ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে’ পৌঁছে দিয়েছে।  সেইসঙ্গে তিনি এই অমানবিক পরিস্থিতির অবসানের দাবি জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক এক্স পোস্টে এসব কথা বলেন ডব্লিউএইচও প্রধান।  খবর আল আরাবিয়ার।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘উত্তর গাজায় সামরিক অভিযান এবং বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ নতুন বাস্তুচ্যুতির ঢেউ তৈরি করছে, যা আতঙ্কগ্রস্ত পরিবারগুলোকে এমন একটি ক্রমশ সংকুচিত এলাকায় ঠেলে দিচ্ছে, যা মানুষের থাকার জন্য উপযুক্ত নয়।’

তিনি আরও লেখেন, হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যেই নিমজ্জিত, আর ইসরাইলি হামলা বৃদ্ধির জন্য সেগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।  সেগুলোতে ডব্লিউএইচও জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে পারছে না।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবারের পর ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৫ হাজার ৬২ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন ফিলিস্তিনি।

গাজায় উপত্যকা আটকে থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য গত ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের প্রচেষ্টায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরাইল ও হামাস।  কিন্তু ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইল। সে সময় থেকে এ পর্যন্ত ৫ মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ১২ হাজার ৫১১ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৬৫৬ জন।

গত মে মাসের শেষ দিক থেকে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ মে প্রথম গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায় ইসরাইলি সেনারা এবং তারপর থেকে নিয়মিতই এটি ঘটছে।

বুধবারও খাদ্য ও ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। এতে নিহত হয়েছেন ৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৭ জন। এর ফলে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত ও আহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ২ হাজার ৫০৪ জন এবং ১৮ হাজার ৩৪৮ জন।

এছাড়া গত ২ মার্চ থেকে গাজায় খাদ্য ও ত্রাণের সরবরাহ সীমিত করেছে ইসরাইলি বাহিনী। ফলে খাদ্যাভাব ও অপুষ্টি তীব্র হয়ে উঠেছে সেখানে।  বুধবার খাদ্য ও অপুষ্টিজনিত কারণে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে গাজায়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত প্রায় দু’বছরে গাজায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ৪৩২ জনের; তাদের মধ্যে ১৪৬ জনই শিশু।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ