বাম ও প্রগতিশীল ঘরানার ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ ১০৮ জনের একটি প্রার্থী তালিকা প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে। আজ রিপোটার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে। এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের পরিচালনা পরিষদের সভায় জোটগতভাবে প্রার্থী তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় গণতন্ত্র মঞ্চ। ৪ অক্টোবরের মধ্যে তারা প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করার কথা জানায়। অবশেষে বুধবার রাতে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মঞ্চের বৈঠকে জোটগতভাবে ১০৮ জনের এই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মঞ্চের শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে প্রার্থী তালিকায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব (লক্ষ্মীপুর-৪), নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না (বগুড়া-৪), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক (ঢাকা-৮), গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু (জামালপুর-৫) এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইউম (কিশোরগঞ্জ-৫) আসনের কথা উল্লেখ রয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আ স ম আব্দুর রব যদি নির্বাচনে অংশ না নিতে পারেন সেক্ষেত্রে তার স্ত্রী ও জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে প্রার্থী হবেন।
জানা গেছে, এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য রাজপথের সঙ্গী যুগপৎ আন্দোলনের জোট ও দলগুলোর কাছে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা চেয়েছে বিএনপি। মিত্ররা তালিকা দেওয়ার পরে দলের প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করবে তারা। এর আলোকে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিকরা কয়েক দফা বৈঠক শেষে তাদের প্রার্থী তালিকা তৈরি করে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর এই তালিকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিএনপিকে দিতে চায় ছয় দলীয় এই জোট।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাদের যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র দল এবং জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদের কাছে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা চেয়েছেন। কোনো কোনো নেতার সঙ্গে আসন নিয়েও কথা বলেছেন। তবে তালিকা জমা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা বেঁধে দেয়নি বিএনপি। তবে মিত্র জোট ও দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজে হাত দেয়। কোনো কোনো জোট তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রণয়নও করেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মিত্রদের আসন ছাড়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। অক্টোবরে দল ও মিত্রদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে চায় বিএনপি।
জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল ও ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আমরা আমাদের জোটের প্রার্থী তালিকা বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছি। প্রথমে জোটভুক্ত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী জনশক্তি পার্টি এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন-এই ছয় দল আলাদাভাবে নিজেদের প্রার্থী তালিকা তৈরি করে। পরে সব যাচাই-বাছাইয়ের পর আমরা ১০৮ জনের একটি তালিকা প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছি।