বিশাখাপত্তনমে শেষ মুহূর্তে বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিতে হলো বাংলাদেশ মেয়েদের। লং অফে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন স্বর্ণা আক্তার, আর পুরো দল তখন মাথায় হাত। কারণ, ওই ক্যাচটা ধরলে দক্ষিণ আফ্রিকার ৮ উইকেট পড়ে যেত। হাতে মাত্র ২ উইকেট নিয়ে শেষ ৭ বলে ৯ রানের সমীকরণ মেলানো প্রোটিয়াদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যেত।
স্বর্ণা ক্যাচ ছাড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার টেলএন্ডার নাডিন ডি ক্লার্ককে। এর আগে ৪৪তম ওভারের প্রথম বলে ডিপ মিড উইকেট থেকে দৌড়ে এসে বদলি ফিল্ডার সুমাইয়া আক্তারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ মিস করেন। এর প্রভাব পড়ে ম্যাচের শেষ দিকে। ৪৬ রানে বেঁচে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লো ট্রায়ন শেষ পর্যন্ত ৬২ রান করে আউট হন।
শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি হতাশা প্রকাশ করে বলেন,
‘ফিল্ডিংটা যদি আরও ভালো হতো, ক্যাচগুলো ধরতে পারলে ফল ভিন্ন হতো। হতাশ হওয়া উচিত নয়, সামনে এগোতে হবে। এখন আমাদের ভাবতে হবে পরবর্তী ম্যাচ নিয়ে।’
ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বর্ণার পারফরম্যান্স ছিল উজ্জ্বল। পাঁচ নম্বরে নামা স্বর্ণা মাত্র ৩৪ বলে ফিফটি তুলে নেন। তিনটি করে চার এবং ছক্কায় ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন। এই ইনিংসের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের মেয়েদের ওয়ানডেতে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড করেন। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩২ রান করতে সক্ষম হয়। জ্যোতিও স্বর্ণার ব্যাটিংকে প্রশংসা করেছেন, যদিও আক্ষেপ রয়েছে শুরুতে আরও ভালো ব্যাটিং হলে স্কোর আরও বড় হতে পারত।
তিনি বলেন, ‘তাকে (স্বর্ণা) নিয়ে অনেক আগে থেকেই কথা বলেছি। তার ব্যাটিং দারুণ উপভোগ করেছি। কীভাবে ব্যাটিং করতে হবে, সেটা দেখিয়েছে। শুরুতে আরও স্ট্রাইক রোটেট করলে হয়তো রান আরও বেশি হত। ২৫০ হলে হয়তো চিত্র ভিন্ন হতো।’
ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচে বাংলাদেশ জয় হাতছাড়া করেছে। ৭ অক্টোবর গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ড ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে, কিন্তু জ্যোতির দল ১৭৮ রানের স্কোরে সীমাবদ্ধ থাকে। একইভাবে, বিশাখাপত্তনমে দক্ষিণ আফ্রিকার ৭৮ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পরও জয়ের দেখা মেলেনি।
ম্যাচ শেষে জ্যোতি সতীর্থদের লড়াকু মানসিকতার জন্য প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘হতাশ না। আমি গর্বিত। মেয়েরা প্রতিটা বলের জন্য লড়াই করেছে। তবে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ কাজ নয়। তারা ১১০ শতাংশ দিয়ে চেষ্টা করেছে।’
এখন দুই পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ মেয়েরা বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকার ছয়ে। সমান ২ পয়েন্ট হলেও নিউজিল্যান্ড পাঁচে রয়েছে। চার ম্যাচে বাংলাদেশ খেলে, নিউজিল্যান্ড খেলে তিনটি। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যদি জয় পেত বাংলাদেশ, হয়তো চিত্র ভিন্ন হতো।