শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫৩ অপরাহ্ন

গাজাবাসীকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিচ্ছে ইসরাইল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৬ প্রদর্শন করেছেন

গাজা উপত্যকায় নতুন করে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরাইল। এছাড়াও পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফা সীমান্ত খোলা হবে না বলেও জানিয়েছে তারা। মূলত এর ফলে গাজাবাসীকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিচ্ছে ইসরাইল।

এদিকে যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) অন্তত ৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

আল-আহলি আরব হাসপাতালের সূত্রে জানা যায়, গাজা সিটির শুজাইয়া এলাকায় পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করে ইসরাইলি সেনারা।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, উত্তর গাজায় তাদের বাহিনীর কাছে যারা এগিয়ে আসছিল, তাদের হুমকি দূর করতে গুলি চালানো হয়।

আল জাজিরা বলছে, মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) জাতিসংঘকে পাঠানো এক বার্তায় ইসরাইল জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন মাত্র ৩০০টি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেবে, যা পূর্ব নির্ধারিত সংখ্যার অর্ধেক।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার (ওসিএইচএ) মুখপাত্র ওলগা চেরেভকো জানিয়েছেন, এই নির্দেশনা দিয়েছে ইসরাইলের সামরিক সংস্থা সিওগ্যাট, যারা গাজায় সহায়তা প্রবাহ তদারকি করে।

বার্তায় আরও বলা হয়, নির্দিষ্ট মানবিক অবকাঠামোর প্রয়োজন ছাড়া গাজায় কোনো জ্বালানি বা গ্যাস ঢুকতে দেওয়া হবে না।

গাজা সিটি থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ বলেন, মাত্র ৩০০ ট্রাক কোনোভাবেই যথেষ্ট নয়। এতে গাজার দুর্ভিক্ষের অবস্থা বদলাবে না।

এই হামলা এমন সময় ঘটেছে যখন ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চার দিন আগে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এই যুদ্ধবিরতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা যুদ্ধ শেষ করার প্রস্তাবের প্রথম ধাপ।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলের হামলায় অন্তত ৬৭ হাজার ৯১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৭০ হাজার ১৩৪ জন। হাজারো মানুষের দেহাবশেষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে।

যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে সোমবার হামাস ও ইসরাইল বন্দি বিনিময় সম্পন্ন করে। প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়, আর গাজা থেকে ২০ জন

ইসরাইলি জিম্মিকে ফেরত পাঠানো হয়। এছাড়া ১৫৪ জনকে মিসরে নির্বাসিত করা হয়।

হামাস জানিয়েছে, ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞের কারণে কিছু বন্দির দেহ উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

জাতিসংঘ এবং রেড ক্রস উভয়ই গাজার সব সীমান্ত খুলে দিতে আহ্বান জানিয়েছে যাতে জরুরি সহায়তা দ্রুত প্রবেশ করতে পারে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এক লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন সাহায্য গাজায় পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস বলেন, ধ্বংসের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে প্রতিদিন অন্তত ৬০০ ট্রাক সহায়তা প্রবেশ করা প্রয়োজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজার হাসপাতালগুলোতে চাপ অব্যাহত থাকবে, তাই চিকিৎসা সরঞ্জাম দ্রুত বাড়ানো জরুরি।

সংস্থাটির মুখপাত্র তারিক যাসারেভিচ বলেন, যত বেশি সম্ভব চিকিৎসা সামগ্রী এখনই পৌঁছে দিতে হবে, যাতে যারা এখনো সেবা দিচ্ছেন, তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা পান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ