শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫২ অপরাহ্ন

এবারের ‘ইত্যাদি’ কুড়িগ্রামে, থাকছে যেসব চমক

বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২১ প্রদর্শন করেছেন

বিনোদন জগতের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ এবার ধারণ করা হয়েছে দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী প্রকৃতি আর ভাওয়াইয়া গানের রাজ্য কুড়িগ্রাম জেলায়। ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ধারণ করা হয়েছে এবারের পর্বটি। বরাবরের মতোই এ পর্বটিও রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা হানিফ সংকেত।

নব্বইয়ের দশক থেকে দেশের প্রান্তিক অঞ্চল, ইতিহাস ও সংস্কৃতির ভেতরে প্রবেশ করে অনুষ্ঠান ধারণ করে আসছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। প্রতিবারের মতো এবারও হানিফ সংকেত ও তার ফাগুন অডিও ভিশন দল বেছে নিয়েছেন এমন একটি স্থান, যেখানে ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি, ভাওয়াইয়া সংগীত ও প্রকৃতি মিলেমিশে আছে এক অনন্য ঐতিহ্যে। এবারের পর্বেও কিছু চমক রেখেছেন নন্দিত উপস্থাপক হানিফ সংকেত।

উত্তরাঞ্চলের প্রাণের সংগীত ভাওয়াইয়া কেন্দ্র করেই সাজানো হয়েছে এবারের সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান অংশ।  অনুষ্ঠানের শুরুতে কুড়িগ্রামের কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় পরিবেশিত হয় একটি পরিচিতিমূলক গান, যার কণ্ঠ দিয়েছেন রাজিব ও তানজিনা রুমা, সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজনে মেহেদী। গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা করেন স্থানীয় অর্ধশতাধিক নৃত্যশিল্পী। এবং কোরিওগ্রাফি করেছেন এসকে জাহিদ।

ভাওয়াইয়ার সুরের আরও একটি বিশেষ আকর্ষণ— ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাসউদ্দীনের বিখ্যাত গান— ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই’, যা নতুনভাবে পরিবেশন করেছেন এই প্রজন্মের গায়িকা সালমা আক্তার এবং উত্তরাঞ্চলের শিল্পী পূর্ণচন্দ্র রায়। পুরোনো সুর সংরক্ষণ করে গানটির নতুন সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

ইত্যাদির এ পর্বেও রয়েছে কয়েকটি তথ্যভিত্তিক ও মানবিক প্রতিবেদন, যার মধ্যে উঠে এসেছে কুড়িগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রামী মানুষের গল্প। জেলার ঐতিহাসিক স্থান—মহারানী স্বর্ণময়ী, বীরপ্রতীক তারামন বিবি, জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর বাড়ি এবং চিলমারী নদীবন্দর নিয়ে রয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন।

বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমি ও এর প্রতিষ্ঠাতা ভূপতি ভূষণ বর্মাকে নিয়ে রয়েছে একটি বিস্তারিত ফিচার প্রতিবেদন, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে ভাওয়াইয়া সংগীত সংরক্ষণে তার অবদান।

২০১১ সালের জুলাই মাসে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে কুড়িগ্রামের কর্মোদ্যোগী যুবক আবদুল কাদেরের গল্প দেখানো হয়েছিল; এবারের ইত্যাদিতে সেই প্রতিবেদনটির ফলোআপ জানতে পারবেন দর্শকরা।

এ ছাড়া রয়েছে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের জীবন-জীবিকা, সম্ভাবনা ও সংগ্রাম নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে রিকতা আখতার বানু নির্মিত বিদ্যালয়ের মানবিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠান ধারণের দিন সকাল থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে কুড়িগ্রাম শহর ও আশপাশের অঞ্চল। দুপুরের পর থেকেই উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুলের মাঠে ভিড় জমতে থাকেন দর্শকরা। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিশেষ আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়, কিন্তু নির্ধারিত আসনের বাইরে হাজারো মানুষ রাস্তা, ছাদ ও গাছের নিচে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন প্রিয় অনুষ্ঠানটির শুটিং। স্থানীয়রা জানান, ইতিপূর্বে কুড়িগ্রামে কখনো কোনো অনুষ্ঠানে এত দর্শক সমাগম হয়নি।

এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন আবদুল আজিজ,  সোলায়মান খোকা, আবদুল্লাহ রানা, সুভাশীষ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান, মুকিত জাকারিয়া, আমিন আজাদ, শাহেদ আলী, আশরাফুল আলম সোহাগ, তারিক স্বপন, নিপু, আবু হেনা রনি, শাওন মজুমদার, সাবরিনা নিসা, জামিল হোসেন, রিমু রোজা খন্দকার, সাদিয়া তানজিন, সুজাত শিমুল, হানিফ পালোয়ান, নজরুল ইসলাম, সূচনা শিকদার, রাজীব সালেহীন, বেলাল আহমেদ মুরাদসহ আরও অনেকে।

এটি প্রচার করা হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে, আগামী ৩১ অক্টোবর (শুক্রবার) রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ