২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের নতুন হোম কিট উন্মোচন করেছে আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দল। এই জার্সি হতে যাচ্ছে লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ জার্সি। এই জার্সিতে আবার কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনারও ছোঁয়া আছে!
আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী সাদা-আকাশি নীল লম্বা স্ট্রাইপ ঠিক রেখেছে। জার্সিকে আধুনিক ছোঁয়া দিতে যোগ করা হয়েছে নতুন গ্রেডিয়েন্ট শেডিং। প্রতিটি নীল স্ট্রাইপে দুই রঙের ফেড ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে হালকা নীল থেকে গাঢ় নীলের দিকে রঙের পরিবর্তন ঘটছে। এর ফলে ঐতিহ্যবাহী ডিজাইন ঠিক রেখেই জার্সিটি বেশ আধুনিক ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জন্য তৈরি এই নতুন জার্সিটি ২০২৬ বিশ্বকাপের অনেক আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২২ বিশ্বকাপে তা প্রকাশ করা হয়েছিল টুর্নামেন্টের ৫ মাস আগে, জুনে। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপের এই জার্সি প্রকাশ পেল বিশ্বকাপের ৭ মাস আগেই।
এই জার্সির ডিজাইন করা হয়েছে ১৯৭৮, ১৯৮৬ ও ২০২২ সালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী জার্সির অনুপ্রেরণা নিয়ে। এই তিন রঙের মধ্যমণি আবার ম্যারাডোনার বিশ্বকাপজয়ী জার্সির রঙটি। ঐতিহাসিক সব কিটের রঙগুলোর সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলে আর্জেন্টিনার ফুটবল ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে অ্যাডিডাস।
বিস্তারিত নকশায় দেখা গেছে, কাঁধের উপর অ্যাডিডাসের তিনটি স্ট্রাইপ ও হাতার প্রান্তে গাঢ় নীল রঙ ব্যবহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২২ বিশ্বকাপেও কাঁধের কাছে তিনটি কালো স্ট্রাইপ আর হাতার কাছে কালো রঙ ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটা এবারও আছে, তবে কালোর পরে নীল রঙের উপস্থিতি আছে।
গ্রেডিয়েন্ট স্ট্রাইপ অবশ্য এবারই আর্জেন্টিনার জার্সিতে প্রথম নয়। ভিন্ন ভিন্ন নকশায় এর আগেও দুই বিশ্বকাপের জার্সিতে এটির উপস্থিতি ছিল। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জার্সিতে ওপরের দিকে গাঢ় আকাশী রঙ থাকলেও নিচের দিকে গ্রেডিয়েন্ট স্ট্রাইপ বা হালকা হয়ে আসছিল রঙটা। ২০১৮ সালের কিটেও এটি ছিল। তবে সেটা স্ট্রাইপের মাঝেই ২-৩ বারের মতো ছিল।
এবারের গ্রেডিয়েন্ট স্ট্রাইপের বাইরের দিকে গাঢ় নীল রঙের জার্সি পরে বিশ্বকাপ জিতেছিল আর্জেন্টিনা, সেটা ১৯৭৮ সালে দানি পাসারেইয়ার অধীনে। এরপরের শেডটা একটু হালকা রঙের, এই শেডের জার্সি পরে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেছে ২০২২ সালে লিওনেল মেসির হাত ধরে। আর সবচেয়ে হালকা আকাশি রঙের জার্সি পরে আর্জেন্টিনা ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জিতেছিল। এই তিনটি রঙের ছোঁয়াই এবারের বিশ্বকাপের জার্সিতে রাখা হয়েছে।
নতুন জার্সিতে আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী আকাশি-সাদা উল্লম্ব দাগ রাখা হয়েছে, তবে এবার এতে যুক্ত হয়েছে তিন রঙের গ্রেডিয়েন্ট ছোঁয়া, যা তিনটি বিশ্বকাপজয়ী সময়ের প্রতীক। জার্সির গলার পেছনে ‘১৮৯৬’ লেখা রয়েছে, যা আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)-এর প্রতিষ্ঠাবর্ষকে স্মরণ করায়।
আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই জার্সি খেলোয়াড়দের শরীর ঠাণ্ডা ও আরামদায়ক রাখবে, যাতে কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেন।