শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

‘অতি স্বল্প সময়ে’ বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১২ প্রদর্শন করেছেন

বাংলাদেশে চলমান ‌‘রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে’ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলায় ‌‘অতি স্বল্প সময়ে’ একটি নতুন সামরিক ঘাঁটি চালু করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

পাশাপাশি, বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত প্রতিরক্ষা জোরদারে আসাম রাজ্যের ধুবরিতে একটি নতুন সামরিক স্টেশনও গড়ে তোলা হচ্ছে।

৭ নভেম্বর (শুক্রবার) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেকান ক্রনিকল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর. সি. তিওয়ারি উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় নবগঠিত ঘাঁটি পরিদর্শন করেন। এটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বেশ কাছেই অবস্থিত।

এটার সত্যতা মেলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডলেও। সেখানে বলা হয়— স্বল্প সময়ের মধ্যেই ওই ঘাঁটি কার্যকর করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এতে বলা হয়— সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি রাখার কথা।

ইস্টার্ন কমান্ড তাদের এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে জানায়, ‘লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর. সি. তিওয়ারি, আর্মিসিডিআরইসি, চোপড়াডিফেন্সল্যান্ড-এ মোতায়েন ব্রহ্মাস্ত্র কর্পস-এর সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি তাদের পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও স্বল্প সময়ে ঘাঁটিটি কার্যকর করার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি সর্বোচ্চ পর্যায়ের কার্যতৎপরতা ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আর্মিসিডিআরইসি চোপড়া বিধানসভা এলাকার এমএলএ হামিদুল রহমান ও স্থানীয় বেসামরিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং সামরিক-বেসামরিক সহযোগিতার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।’

পরবর্তীতে তিনি আসাম সীমান্তবর্তী এলাকায় ৪ (গজরাজ) কোর পরিদর্শন করেন এবং ধুবরির বামুনিগাঁওয়ে ‘লাচিত বরফুকন মিলিটারি স্টেশন’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

ইস্টার্ন কমান্ডের ভাষায়, ‘আসামের কিংবদন্তি আহোম সেনাপতি লাচিত বরফুকনের নামে নামাঙ্কিত এই স্টেশন সাহস, নেতৃত্ব ও অদম্য মানসিকতার প্রতীক, যা নবজাগরিত অসমের ঐতিহ্য বহন করছে।’

নতুন এই স্টেশনকে ভারতের পূর্বাঞ্চলে দেশটির সেনাবাহিনীর কার্যক্ষমতা ও অবকাঠামো শক্তিশালী করার ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

সফরকালে সেনা কমান্ডার সীমান্তবর্তী এলাকার কার্যতৎপরতা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও চলমান অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন।

‌‘চিকেন নেক’-এ সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে ভারত

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে ৪,০৯৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতের জন্য স্পর্শকাতর হলো সিলিগুড়ি করিডর। কারণ, এই করিডরটির একপাশে চীন ও নেপাল রয়েছে, আর আরেক পাশে রয়েছে বাংলাদেশ।

বর্তমান ভূরাজনীতিতে তিনটি দেশের সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক উঠানামা করছে।বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর দিল্লি-ঢাকা সম্পর্ক এখন শীতল।

এমন আবহে ‘অতি স্বল্প সময়ে’ বাংলাদেশ সীমান্তে একটি নতুন সামরিক ঘাঁটি চালু ভারতের কৌশলগত বড় পদক্ষেপ। এছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তকে গুরুত্ব দিয়ে গত সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় ‘কম্বাইন্ড কমান্ডারস কনফারেন্স’ করে ভারত। যেখানে উপস্থিত ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বাংলাদেশের নজরদারি কতুটুকু?

আর একই সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বার্মাছড়ি এলাকায় যখন ‘স্থিতিশীল পরিবেশের’ স্বার্থে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যখন একটি অস্থায়ী সেনাক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে, ঠিক তখন নানা অজুহাতে ষড়যন্ত্রমূলক বিরুপ পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে।

পাহাড়ি সন্ত্রাসী দল ইউপিডিএফের এই অবস্থান জাতীয় নিরাপত্তা কার্যক্রম সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জও বটে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ