সিরিয়ার অন্তবর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে এক ঐতিহাসিক বৈঠকের পর দামেস্ককে সফল করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১০ নভেম্বর) হোয়াইট হাউজে শারার সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রয়টার্স বলছে, দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী নেতা বাশার আল-আসাদকে উৎখাতকারী বিদ্রোহী নেতা থেকে সিরিয়ার শাসনভার নেওয়া শারার জন্য এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেনিজেকে একজন মধ্যপন্থি নেতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।
ওয়াশিংটনে শারা’র সফরের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল কঠোরতম নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রকে রাজি করানো।
ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করার সময়, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ তথাকথিত সিজার আইন অনুসারে নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর করার স্থগিতাদেশের মেয়াদ ১৮০ দিনের জন্য বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। তবে কেবল মার্কিন কংগ্রেসই এগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করতে পারে।
সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের সময় সাধারণ মানুষের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারনে নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ‘ধাপে ধাপে এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের’ প্রতিশ্রুতি দেয় ওয়াশিংটন।
এদিকে, সৌদি আরবে তাদের প্রথম বৈঠকের ছয় মাস পরে, সোমবার ওয়াশিংটনে প্রথম কোনো সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করলেন ট্রাম্প। সৌদি আরবে বৈঠকের সময়ই ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহারের পরিকল্পনার ঘোষণা করেছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধুমধাম করা হয় তা ছাড়াই সোমবার ওয়াশিংটন এসে পৌঁছান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারা।
তবে, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়, ট্রাম্প শারাকে একজন ‘শক্তিশালী নেতা’ হিসেবে প্রশংসা করেন এবং তার প্রতি আস্থা জানান।
তিনি বলেন, ‘সিরিয়াকে সফল করার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’ বলেন ট্রাম্প।
কিন্তু ট্রাম্প শারা’র বিতর্কিত অতীতকেও সমর্থন করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সকলেরই একটি অতীত আছে।’
৪৩ বছর বয়সি শারা গত বছর ক্ষমতা গ্রহণ করেন যখন তার ইসলামপন্থি যোদ্ধারা আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে এবং মাত্র কয়েকদিন পরে ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার দীর্ঘকালীন প্রেসিডেন্ট আসাদকে উৎখাত করে।
ট্রাম্প- শারা’র বৈঠকে নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল বলে আশা করা হচ্ছে। ট্রাম্প মার্কিন নীতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে সিরিয়ার ভঙ্গুর পরিবর্তনে সহায়তা করার চেষ্টা করছেন।
এছাড়া সিরিয়া ও ইসরাইলের মধ্যে একটি সম্ভাব্য নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। রয়টার্স গত সপ্তাহে রিপোর্ট করেছিল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কের একটি বিমানঘাঁটিতে সামরিক উপস্থিতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।
সোমবার এক্সে একটি পোস্টে সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিরিয়া সম্প্রতি মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইসলামিক স্টেটকে পরাজিত করার জন্য বিশ্বব্যাপী জোট-এর সাথে একটি রাজনৈতিক সহযোগিতা ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করেছে।
তথ্যসূত্র: আনাদোলু