সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ অপরাহ্ন

ঢাবিতে পোস্টার লাগানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৬ প্রদর্শন করেছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পোস্টার সাঁটানোর প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। বুধবার রাত ১০টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এসব পোস্টার সাঁটানো হয়।

শিক্ষার্থীরা প্রথমে ভিসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করার পর বিভিন্ন হল ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান নেওয়ার পর রাত ১২টার দিকে তারা হলে ফেরত যান।

মিছিলে ‘টু জিরো টু ফোর, ছাত্ররাজনীতি নো মোর’, ‘দেয়ালে পোস্টার লাগালে, দুঃখ আছে কপালে’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’ এমন নানা স্লোগান দেওয়া হয়।

মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক স ম আলী রেজা।

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের সবার কথা বুঝতে পেরেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তোমরা স্মারকলিপি দাও। আমিও তোমাদের সঙ্গে যাব।’

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাইম বলেন, ‘আমরা ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলের প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটর থেকে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে সই নিয়েছি। কিন্তু এখন সে ধরনের কার্যক্রম দেখছি, পোস্টার দেখছি। আমরা ছাত্র সমাজ কখনো তা মেনে নেব না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যেকোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমের আলোচনা-সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের পোস্টার সাঁটানোকে কেন্দ্র করে যে ঘটনা ঘটল তাকে ঠিক গণতান্ত্রিক সমালোচনা বলতে পারছি না।’

‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই দিনে সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন, তাই এই দিবসটির তাৎপর্য সম্বলিত পোস্টার সাঁটানো আমাদের দীর্ঘদিনের রুটিন কার্যক্রম,’ বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান সপরিবারের নিহত হওয়ার পর সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান হলে গৃহবন্দি হন জিয়া।

পরে ৭ নভেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে যুক্ত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন, পরে দেশের প্রথম সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন।

বিএনপি এই দিনকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ এবং জাসদ ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালন করে। অন্যদিকে গত ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করতো।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ