হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নারী সেনাদেরও নিয়োগ করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। গত বছরের অক্টোবর থেকে তীব্র সীমান্ত সংঘর্ষের পর, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরাইল। লেবানন ভূখণ্ডে ইসরাইলি সেনাদের যে সব ইউনিট কাজ করছে, প্রথমবারের মতো সেখানে নারী সেনার দল পাঠিয়েছে ইসরাইল।
সম্প্রতি ইসরাইলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর (আইডিএফ) প্রকাশিত ভিডিওতে নারী সেনার দলকে সাঁজোয়া গাড়িতে দক্ষিণ লেবাননে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। এরপর সামরিক সরঞ্জামের ব্যাগ কাঁধে, হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একটি বাড়িতেও ঢুকতে দেখা গিয়েছে তাদের। পাশাপাশি, জঙ্গলের রাস্তাতেও মোতায়েন ছিলেন তরুণী যোদ্ধারা।
এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারশেন দক্ষিণ লেবানন’।
এর অভিজ্ঞতা নিয়ে তেহিলা নামের ২১ বছরের এক সেনা তরুণী ‘দ্য জেরুজালেম পোস্টকে বলেন, ‘আমরা হেঁটে সন্ত্রাসীদের এলাকায় ঢুকে তাদের চিহ্নিত করেছি। সেটা একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার ছিল। এটা কোনও গুপ্তচরবৃত্তি নয়। দলের সবাই হাতিয়ার নিয়ে গিয়েছিলাম।’ আইডিএফের ‘আইট’ ব্যাটালিয়নে কর্পোরাল পদে রয়েছেন তেহিলা।
২০ বছর বয়সী শেনি নামের আরেক কর্পোরাল পদধারী বলেন, ‘আমরা লেবাননের ভিতরে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত ঢুকে যাই। আমাদের সৈনিকেরা যে এলাকাগুলোর এখনও খোঁজ পাননি, সেখানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমাদের।’
কর্পোরাল শেনি বলেছেন, ‘আমরা ট্যাঙ্ক থেকে নির্গত আগুনের ছবি তুলেছিলাম। এরপর যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়েই সেগুলিকে বিশ্লেষণ করি। তখনই শত্রুদের গতিবিধি অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যায়।’
শেনি জানিয়েছেন, অব্যাহত হামলার মুখে বর্তমানে শহর ছেড়ে হিজবুল্লার যোদ্ধারা লেবাননের গ্রামগুলোতে ঘাঁটি তৈরি করছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, হিজবুল্লার ট্যাঙ্ক ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র লুকিয়ে রাখার জায়গা এবং তাদের একাধিক গুপ্ত আস্তানার সঠিক ঠিকানার খােঁজ পেয়েছে তাদের নারী দল। সেই মতো আক্রমণ চালাচ্ছে তারা।
তাদের আরো দাবি, স্কুল-হাসপাতালের পাশাপাশি বহু সাধারণ নাগরিকের বাড়িতে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে।
ইসরাইলের আইন অনুযায়ী দেশের প্রতিটি নাগরিককে সেনা প্রশিক্ষণ নিতে হয়। সেনাবাহিনীতে চাকরিও এখানে বাধ্যতামূলক। যদিও এত দিন নারীদের সেনা রিজার্ভে রাখার প্রথা ছিল। এবার তাদের সরাসরি রণাঙ্গনে পাঠালো বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার।