গত জুলাইয়ের পর ফের হাসপাতালে আনা হয়েছে ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানিকে। অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বিজেপির এই রাজনীতিবিদকে। তবে ঠিক কী কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তা স্পষ্ট ভাবে জানায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নয়াদিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তিরত আদবানি বর্তমানে ‘স্থিতিশীল’ অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
বার্তাসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ বিনীত সুরির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন আদভানি। রিপোর্ট অনুযায়ী, দু’দিন আগে হাসপাতালে আনা হয়েছিল ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রীকে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন আদভানি। এর আগে গত ২৬ জুন, নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে ভর্তি করা হয়েছিল লালকৃষ্ণ আদভানিকে। সেবার হাসপাতালের জেরিয়াট্রিক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল এই ৯৬ বছর বয়সি রাজনীতিবিদকে। এই আবহে অনুমান করা হচ্ছে, আদবানির বার্ধক্যজনিত সমস্যার চিকিৎসা চলছে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আডবানিকে ভারত রত্নে ভূষিত করা হয়েছিল। অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করার সপ্তাহদুয়েকের মধ্যেই সেই ঘোষণা করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, রামজন্মভূমি আন্দোলনের ‘মুখ’ ছিলেন আদভানি। তার হাত ধরেই ২ সাংসদের দল থেকে ধীরে ধীরে দেশে শক্তি বাড়িয়েছিল বিজেপি। পরে বাজপেয়ী সরকারে উপপ্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন আদভানি।
১৯২৭ সালের ৮ নভেম্বর করাচিতে জন্ম নেওয়া আদভানি ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারতে চলে এসেছিলেন। ১৪ বছর বয়সে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদস্য হয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে লালকৃষ্ণ আদভানি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জন সংঘে যোগ দেন। ১৯৭০ সালে তিনি রাজ্যসভায় প্রবেশ করেন এবং দুই বছর পরে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার সময় আদবানি গ্রেফতার হয়েছিলেন বাজপেয়ীর সঙ্গে।
১৯৭৭ সালে মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন জনতা পার্টি সরকার ক্ষমতায় এলে আদভানি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৮০ সালে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০-এর দশকে বিজেপিকে জাতীয় শক্তি হয়ে ওঠার পিছনেও তার হাত ছিল। সব মিলিয়ে তিনি তিনবার বিজেপি সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৯ সালে বিজেপির তরফ থেকে আদভানিকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয়েছিল। তবে দল জয়ী হয়নি সেবার।