থাইল্যান্ডে আশ্রয় নেওয়া উইঘুর মুসলিমদের মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে চীনে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে ওয়াশিংটন। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। খবর রয়টার্সের।
বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ৪০ জন উইঘুরকে জোরপূর্বক চীনে ফেরত পাঠানোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাবেক ও বর্তমান থাই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমি এই সিদ্ধান্ত শিগগিরই কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছি।
মার্কো রুবিও আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘূ উইঘুরদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে চীনের সরকার। যেসব দেশে উইঘুররা আশ্রয় নিয়েছেন, সেসব দেশের সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে- তাদেরকে যেন চীনে ফেরত পাঠানো না হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া পৃথক এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়া উইঘুর মুসলিমদের ফেরত পাঠাতে চীন সেসব দেশের সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই তৎপরতা ঠেকাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চীনে এই উইঘুররা অব্যাহত নির্যাতন ও গুম-খুনের শিকার হচ্ছে।
তবে ওয়াশিংটনের থাই দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।
থাই কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালে চীন থেকে পালিয়ে আসা ৩০০ জনেরও বেশি উইঘুরকে আটক করেছিল। ফেব্রুয়ারির মধ্যে থাই আইনপ্রণেতা এবং আন্তর্জাতিক কর্মকর্তাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তাদের চীনে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়। সেইসময় ৪৮ জন উইঘুর থাই কর্তৃপক্ষের অধীনে থেকে যায়।
ফেসবুক পোস্টে ব্যাংককের চীনা দূতাবাস বলেছে, যে ৪০ জন চীনা নাগরিককে পাচার করা হয়েছিল তাদের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে জিনজিয়াংয়ে প্রত্যাবর্তন করা হয়েছিল এবং তারা সবাই দেশে ফিরেছে। ১০ বছরেরও বেশি সময় পরে তাদের পরিবারের সঙ্গে তারা পুনরায় মিলিত হয়েছে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি উইঘুর মুসলিমদের ফেরত পাঠানোর পর প্রাথমিকভাবে অসন্তোষ জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে সেময় আত্মপক্ষ সমর্থন করে ব্যাংকক বলেছিল, আইন ও মানবাধিকারকে সমুন্নত রেখেই এই উইঘুরদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।
উইঘুররা চীনের সুদূর পশ্চিমের জিনজিয়াংয়ের একটি তুর্কি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম গোষ্ঠী। তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় দমন নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে কয়েক দশকের বিরোধের পর চীনা সরকার উইঘুরদের ওপর একটি নৃশংস দমন অভিযান শুরু করে, যেটিকে কিছু পশ্চিমা সরকার গণহত্যা বলে মনে করে।