বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান খেলার মাঠ ছেড়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়ায় নিন্দা কুড়িয়েছেন বেশ। বর্তমানে নানা কারণে দেশে আসতে পারছেন না তিনি।
অবশ্য দেশের বাইরে থাকা এই ক্রিকেটারকে অবশ্য রাজনীতির এই মাঠে পা রাখার আগেই সাবধান করেছিলেন সাবেক তারকা ফুটবলার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম।
শনিবার এক অনুষ্ঠানে সাকিবকে ঘিরে এমন মন্তব্য করেন এই রাজনীতিবিদ।
শনিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অডিটরিয়ামে নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন’-এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘সাকিবকে আমি উপদেশ দিয়েছিলাম- যাই করো না করো, আওয়ামী লীগে যেও না। ও তখন আমার কথা শুনলে আজ এই অবস্থায় পড়তে হতো না। এখন তো বাড়িতেই আসতে পারবে না।’
রাজনৈতিক বক্তব্যের পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, সাকিবের জনপ্রিয়তা এমন পর্যায়ে ছিল যে, তার রাজনীতিতে না আসলেও চলত। ‘বলেছিলাম, তোমার অনেক নাম হয়েছে, এখন রাজনীতি করো না। কারণ, এই দলটি (আওয়ামী লীগ) আর বেশি দিন নেই। তাতে সে রক্ষা পেত,’ বলেন হাফিজ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ ক্রিকেটের আরেক পরিচিত মুখ তামিম ইকবালকেও উপদেশ দিতে ভুল করেননি হাফিজ। মঞ্চে বসে থাকা তামিমের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তোমাকেও বলছি- এই পথ থেকে সাবধান থাকো।’
উল্লেখ্য, মূলত জাতীয়তাবাদী ঘরানার ক্রীড়া সংগঠকদের সমন্বয়ে গঠিত এই সংগঠনটি দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার দাবি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করল।
এর আগে ১৯ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা মেজর (অব.) হাফিজ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ভাইরাল হওয়া ছবি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ছবিটি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি সংবাদপত্র মনের মাধুরী মিশিয়ে নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশ করছে।
হাফিজ বলেন, সাবেক কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা বিএনএম গঠন করে (দ্বাদশ নির্বাচনের আগে) আমাকে সেখানে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানায় এবং তারাই সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আসে। সাকিব আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা জানায়। কিন্তু আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়। হাফিজের দাবি, তিনি এমন কিছু করেননি যার জন্য লজ্জিত হতে হবে।
হাফিজ বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাই সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি দেশ সেরা ক্রিকেটার। বিশ্বখ্যাত অলরাউন্ডার। সাকিব আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করে। তাকে বিএনএম এর দুজন নেতা আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি বলেছি- রাজনীতি করা তোমার বিষয়। তুমি এখনো খেলাধুলা করছো, রাজনীতি করবে কিনা চিন্তাভাবনা করে দেখ। আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়। এ ঘটনা নির্বাচনের চার-পাঁচ মাস আগে হবে। যা হোক, যখন ক্ষমতাসীনদের চাপ বাড়তে লাগলো, এমনকি তৎকালিন তথ্যমন্ত্রী ঘোষণাই দিয়ে দিলেন হাফিজ সাহেব শিগগিরই নতুন দল গঠন করবেন এবং নির্বাচনে যাবেন। তার পরের দিনই নির্বাচনের দুই মাস আগে আমি একটা সংবাদ সম্মেলন করি। সেখানে সবকিছুই বলেছি।